ভারতীয় জলসীমায় ধরা পড়ল ১৩ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী

ভারতীয় জলসীমায় ধরা পড়ল ১৩ বাংলাদেশি মৎস্যজীবী

ফ্রেজারগঞ্জ উপকূলে কোস্টগার্ডের অভিযান, আটক ট্রলার ‘মায়ের দোয়া’ : দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ উপকূলে আবারও ধরা পড়ল বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরা। উপকূল রক্ষী বাহিনীর নজরদারিতে ভারতীয় জলসীমা অতিক্রম করা মাত্রই আটক হয়েছিল একটি বাংলাদেশি ট্রলার। সেই ট্রলার থেকেই উদ্ধার করা হয় ১৩ জন মৎস্যজীবীকে। আটক ট্রলারটির নাম ‘মায়ের দোয়া’। বর্তমানে ধৃতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানায়।

আটককৃতদের পরিচয়

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মৎস্যজীবীদের বেশিরভাগের বাড়ি বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার পূর্বচণ্ডীপুরে। এছাড়াও ফিরোজপুর ও জিয়ানগরেরও কয়েকজন রয়েছেন এই তালিকায়। তদন্তকারীদের দাবি, সাগরের খারাপ আবহাওয়া এবং দিক নির্ণয়ে ভুলের কারণে তাঁদের ট্রলার আন্তর্জাতিক সীমা পেরিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে।

উপকূলরক্ষীর তৎপরতা

ট্রলারটি আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করার পরেই সক্রিয় হয় ভারতীয় কোস্টগার্ড। মুহূর্তের মধ্যে ট্রলার ঘিরে ফেলা হয়। প্রতিরোধ ছাড়াই মৎস্যজীবীদের আটক করে ফ্রেজারগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁদের হস্তান্তর করা হয় কোস্টাল থানায়। সেখানেই চলছে দীর্ঘ জেরা।

দুই দেশের জেলে সমস্যা পুরনো

শুধু বাংলাদেশ নয়, গত কয়েক মাসে উলটো দিকেও একই ছবি ধরা পড়েছে। বাংলাদেশের উপকূল রক্ষীরা ইতিমধ্যেই তিনটি ভারতীয় ট্রলার এবং অন্তত ৪৮ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছে। সমুদ্রের প্রতিকূল পরিস্থিতি এবং সীমানা চিহ্নিত করতে না পারার কারণে এমন ঘটনা বারবার ঘটছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রশাসনিক প্রক্রিয়া

অভিযুক্তদের কাকদ্বীপ মহাকুমা আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ থানা। পাশাপাশি ঘটনার খবর বাংলাদেশ সরকারকেও জানানো হবে। গত বছরও একইভাবে দুই দেশের মৎস্যজীবীদের প্রশাসনিক উদ্যোগে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এ বছরও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হতে পারে।

সংগঠনের দাবি

ভারতীয় মৎস্যজীবী সংগঠনের তরফে আগেই দাবি উঠেছিল, সমুদ্রপথে মাছ ধরতে গেলে প্রায়ই এ ধরনের ঝুঁকি থেকে যায়। দুই দেশের সরকারের উচিত যৌথ বৈঠকের মাধ্যমে সীমানা স্পষ্ট করা এবং আটক হওয়া জেলেদের দ্রুত প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা।

ফ্রেজারগঞ্জ উপকূলে ধরা পড়া ১৩ বাংলাদেশি মৎস্যজীবীর ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের সূক্ষ্ম সমস্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রশাসনের তরফে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর পদক্ষেপ নেওয়া হলেও আপাতত তদন্ত ও আদালতের প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে ভারতীয় মৎস্যজীবীরাও এখনো বাংলাদেশে আটক রয়েছেন। ফলে জেলেদের ভাগ্য নির্ভর করছে দুই দেশের কূটনৈতিক তৎপরতার ওপর।

Leave a comment