জবলপুরের বরগি হিলসের দুর্গাপূজা মণ্ডপে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৬ বছর বয়সী আয়ুষ এবং ১০ বছর বয়সী বেদের মৃত্যু হয়েছে। শিশুরা আরতিতে অংশ নিতে এসেছিল। জেলা প্রশাসক ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জবলপুর: জেলার তিলওয়ারাঘাট থানা এলাকার বরগি হিলস অঞ্চলের একটি দুর্গাপূজা মণ্ডপে বুধবার রাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুরা দুর্গাপূজা মণ্ডপে আয়োজিত আরতিতে অংশ নিতে এসেছিল। এই দুর্ঘটনায় মণ্ডপে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসক ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে।
দুর্গাপূজা মণ্ডপে দুর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
তথ্য অনুযায়ী, মণ্ডপের সাজসজ্জার জন্য লাগানো ঝালর থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এই ঘটনা ঘটে। বিদ্যুতের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে দুই শিশু সঙ্গে সঙ্গে এর শিকার হয়। মৃতদের পরিচয় ৬ বছর বয়সী আয়ুষ এবং ১০ বছর বয়সী বেদ হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা শিশুদেরকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর মণ্ডপে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং লোকজন ভয়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পঞ্চনামা করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো পাঠায়।
পুলিশের পদক্ষেপ
তিলওয়ারাঘাট পুলিশ মৃতদের বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে মণ্ডপটি বরগি হিলসে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের সামনে স্থাপন করা হয়েছিল এবং আরতির সময় সেখানে প্রচুর ভিড় ছিল।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন যে ঘটনাস্থলে সাজসজ্জার সময় নিরাপত্তা মানদণ্ডের অভাব এবং বিদ্যুতের তারের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এখন পুরো ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষীদের দায়বদ্ধতা নির্ধারণের চেষ্টা করছে।
জেলা প্রশাসক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন
জেলা প্রশাসক রাঘবেন্দ্র সিং ঘটনার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি গোরক্ষপুর এসডিএম অনুরাগ সিংয়ের নেতৃত্বে একটি তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছেন। এই দলে জনপূর্ত বিভাগের এসডিও এসকে শর্মা এবং পূর্ব ক্ষেত্র বিদ্যুৎ কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী দীনেশ পালকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন যে তদন্ত দল তিন দিনের মধ্যে সমস্ত সম্ভাব্য কারণ বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। এর উদ্দেশ্য হলো দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নির্ধারণ করা।
দুর্ঘটনায় মন্ত্রী ও প্রশাসনের শোক প্রকাশ
জনপূর্ত মন্ত্রী রাকেশ সিং এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রেড ক্রসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দুই লক্ষ টাকা করে সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেছেন যে প্রশাসন ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে এবং ভবিষ্যতে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
স্থানীয় প্রশাসনও মণ্ডপগুলোতে বিদ্যুৎ ও সাজসজ্জার সময় নিরাপত্তা মানদণ্ড কঠোরভাবে প্রয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে। কর্মকর্তারা জনগণের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা শিশুদেরকে এমন অনুষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশে অংশগ্রহণ করান এবং কোনো ধরনের অবহেলা না করেন।