সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, জয়পুরের তিনজন যুবতী হেলমেট ছাড়া বাইকে স্টান্ট করছে, পুলিশ তাদের চিহ্নিত করে চালান কাটে এবং নিয়ম পালনের কঠোর সতর্কতা জারি করে।
Jaipur: আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বিখ্যাত হওয়ার প্রবণতা যুবকদের মধ্যে এক অন্যরকম উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে। ভাইরাল রিল এবং লাইকের আশায় যুবকরা নিজেদের এবং অন্যদের জীবন বিপন্ন করতেও পিছপা হয় না। এমনই একটি ঘটনা রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরে ঘটেছে, যেখানে তিনজন যুবতী একটি বাইকে হেলমেট ছাড়া স্টান্ট করে রিল বানায় এবং সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে।
বাইকে তিন যুবতীর মজা, ভিডিওটি ভাইরাল
ঘটনাটি জয়পুরের একটি ব্যস্ত রাস্তায় ঘটে, যখন একটি বাইকে তিনজন যুবতীকে বসে থাকতে দেখা যায়। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না, এবং ট্র্যাফিক নিয়মও মানা হয়নি। শুধু তাই নয়, বাইকটি দ্রুত গতিতে বিপজ্জনকভাবে চালানো হচ্ছিল, এবং পিছনে বসা যুবতী ভিডিও করা ব্যক্তিকে উড়ন্ত চুম্বন দিচ্ছিল। এই পুরো দৃশ্যটি একটি চলন্ত রাস্তায় ঘটছিল, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক ছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার পর পুলিশের তৎপরতা
ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা শুধু যুবতীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের সমালোচনা করেননি, বরং জয়পুর ট্র্যাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ব্যবহারকারীরা জানতে চান, শহরের রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও কীভাবে এই ধরনের স্টান্ট সম্ভব?
বাইকের নম্বর থেকে যুবতীদের কাছে পৌঁছল পুলিশ
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জয়পুর পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। ভিডিওতে দেখা যাওয়া বাইকের নম্বরের সাহায্যে তিন যুবতীকে শনাক্ত করা হয়। এরপর পুলিশ তাদের লোকেশন ট্র্যাক করে তাদের বাড়িতে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ তাদের ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে বুঝিয়ে বলে এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার জন্য সতর্ক করে।
ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করে বিপাকে
তিনজন যুবতীর বিরুদ্ধে একসঙ্গে একাধিক নিয়ম ভাঙার অভিযোগ ছিল—হেলমেট ছাড়া বাইক চালানো, দু’জনের বেশি যাত্রী বহন করা, চলন্ত গাড়িতে রিল তৈরি করা এবং সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা। জয়পুর ট্র্যাফিক পুলিশ এই সব অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্ট ধারায় তাদের চালান কাটে।
বাবা-মাকেও দেওয়া হল সতর্কবার্তা
পুলিশ শুধু যুবতীদের নয়, তাদের বাবা-মাকে ডেকেও ট্র্যাফিক আইনের গুরুত্ব বোঝায়। তাদের জানানো হয় যে এই ধরনের लापरवाही শুধু আইনত অপরাধ নয়, এটি মারাত্মকও হতে পারে। বিশেষ করে কিশোর এবং যুবকদের মধ্যে বাড়তে থাকা সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি নিয়েও আলোচনা করা হয়।
ভাইরাল ভিডিও থেকে শিক্ষা
এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরি যে কয়েক সেকেন্ডের একটি রিল যদি আপনার জীবনকে বিপন্ন করে তোলে, তাহলে সেই ভাইরাল হওয়ার কোনো মানে নেই। যুবকদের এটা বোঝা উচিত যে রাস্তায় স্টান্ট করা, মজা করা বা ভিডিও বানানো শুধু নিজের জন্য নয়, অন্যদের জন্যও বিপজ্জনক হতে পারে।
পুলিশের আবেদন এবং সতর্কবার্তা
জয়পুর ট্র্যাফিক পুলিশ এই ঘটনার পর একটি আবেদনও জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করে ক্যামেরায় ধরা পড়ে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনকি যদি সে রিল বানানোর জন্যেও করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার নামে নিয়ম ভাঙা এখন আর বরদাস্ত করা হবে না।