পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আরসিবি-র বিজয় প্যারেড আয়োজন করা হয়েছিল। হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়িতে ১১ জনের মৃত্যু এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। কর্ণাটক সরকার আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছে।
আরসিবি ভিক্টরি প্যারেড: আরসিবি-র ভিক্টরি প্যারেডে হুড়োহুড়ি নিয়ে কর্ণাটক সরকার হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আরসিবি পুলিশের অনুমতি ছাড়াই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, যার ফলে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। রিপোর্টে বিরাট কোহলির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আদালত সরকারের রিপোর্ট গোপন রাখার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
আরসিবি-র ভিক্টরি প্যারেডে হুড়োহুড়ির তদন্ত রিপোর্ট পেশ
আইপিএল ২০২৫-এর বিজয়ী দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (আরসিবি)-এর বিজয় প্যারেডের সময় হুড়োহুড়ি হওয়ার ঘটনায় কর্ণাটক সরকার হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছে। এই রিপোর্টে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে প্যারেড আয়োজনের আগে আরসিবি পুলিশের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেয়নি।
অনুমতি ছাড়াই আয়োজন করা হয়েছিল অনুষ্ঠান
রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩ জুন আরসিবি ম্যানেজমেন্ট ব্যাঙ্গালোর পুলিশকে প্যারেডের বিষয়ে জানিয়েছিল, কিন্তু এটা শুধুমাত্র একটি তথ্য ছিল, কোনো আইনি অনুমতি নেওয়া হয়নি। কর্ণাটকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সর্বজনীন অনুষ্ঠানের জন্য কমপক্ষে সাত দিন আগে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।
আরসিবি-র সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বিতর্কের কারণ
সরকারের রিপোর্টে আরসিবির সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, পুলিশের পরামর্শ ছাড়াই ৪ জুন সকাল ৭:০১-এ আরসিবি তাদের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে প্যারেডের ঘোষণা করে। এই পোস্টে সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এর কিছু সময় পর, সকাল ৮টায় এবং তারপর ৮:৫৫-এ আরসিবি আরও একটি পোস্ট করে যেখানে বিরাট কোহলির একটি ভিডিও ছিল। এই ভিডিওতে কোহলি বলেছিলেন যে দল এই জয় ব্যাঙ্গালোরের মানুষ এবং সমর্থকদের সঙ্গে উদযাপন করতে চায়।
বিজয় প্যারেডের সময় এবং স্থান
আরসিবি-র প্যারেডের সময় বিকেল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত নির্ধারিত করা হয়েছিল, যা বিধান সৌধ থেকে শুরু হয়ে এম. চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। হঠাৎ এবং কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই এই ঘোষণার কারণে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এই ভিড়ে নিয়ন্ত্রণের কোনো স্পষ্ট ব্যবস্থা ছিল না।
১১ জনের মৃত্যু, ৫০ জন আহত
প্যারেডের সময় হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়, যাতে ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয় এবং ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হন। রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, যদি অনুষ্ঠানের আগে অনুমতি নেওয়া হত এবং পুলিশকে আগে থেকে জানানো হত, তাহলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
সরকার রিপোর্টের গোপনীয়তা চেয়েছিল, কোর্ট নাকচ করে দেয়
রাজ্য সরকার আদালতের কাছে অনুরোধ করেছিল যে এই রিপোর্ট গোপন রাখা হোক, কিন্তু কর্ণাটক হাইকোর্ট এই আবেদন খারিজ করে দেয়। আদালতের বক্তব্য ছিল যে, এই ধরনের তথ্য গোপন করার কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং জনগণের সত্য জানার অধিকার আছে।
আরসিবি-র জন্য প্রশ্নের পালা শুরু
রিপোর্ট সামনে আসার পর আরসিবি-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলmanagement কি এত বড় ভিড়ের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে অবগত ছিল না? তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতি সত্ত্বেও কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়নি?
রিপোর্টে বিরাট কোহলির সেই ভিডিওর বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে তিনি ফ্যানদের প্যারেডে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই ক্লিপটি আরসিবি-র টুইটার/এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা হয়েছিল, যার ফলে ভিড় আরও বেড়ে গিয়েছিল।