জয়পুরের এসএমএস হাসপাতাল ট্রমা সেন্টারে আগুন লাগার সময় তিন পুলিশকর্মী হরিমোহন, ললিত এবং বেদবীর নিজের জীবনের পরোয়া না করে অনেক রোগীকে বাঁচিয়েছিলেন। তিনজনই আহত হয়েছিলেন, কিন্তু অনেক জীবন বেঁচে গিয়েছিল।
জয়পুর: সাওয়াই মানসিং (SMS) হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে গভীর রাতে লাগা ভয়াবহ আগুন চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আইসিইউতে আটকে পড়া রোগীদের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল এবং অনেকে শ্বাসরোধের ভয়ে আতঙ্কিত হয়েছিলেন। এই কঠিন সময়ে তিন পুলিশকর্মী—হরিমোহন, ললিত এবং বেদবীর—নিজের জীবনের পরোয়া না করে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে অনেক রোগীর জীবন বাঁচিয়েছিলেন। এই সাহসিকতা সত্ত্বেও আটজন রোগীর মৃত্যু হয়, যদিও আরও কয়েক ডজন রোগীকে নিরাপদে বাইরে বের করে আনা হয়েছিল।
আইসিইউতে আগুন লাগায় বিশৃঙ্খলা
রবিবার গভীর রাতে ট্রমা সেন্টারের আইসিইউর পিছনে আগুন লাগে। রোগী এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ওয়ার্ডে ধোঁয়া ভরে যাওয়ায় দৃশ্য অস্পষ্ট ছিল এবং অনেক রোগী আটকা পড়েছিলেন। ধোঁয়া এবং আগুনের তীব্রতায় ওয়ার্ডে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে উপস্থিত মানুষ ভয়ে চিৎকার করছিল।
পুলিশ কনস্টেবল হরিমোহন, যিনি সেই সময় ট্রমা সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন, ঘটনাটি দ্রুত তার সহকর্মী পুলিশকর্মীদের জানান। তিনজন মিলে দ্রুত আইসিইউর দিকে ছুটে যান এবং আটকে পড়া রোগীদের নিরাপদে বাইরে বের করার প্রস্তুতি নেন।
পুলিশকর্মীদের সাহসিকতায় রোগীদের উদ্ধার
হরিমোহন, ললিত এবং বেদবীর ওয়ার্ডের জানালা ভেঙে ধোঁয়া বাইরে বের করে দেন এবং ধোঁয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা রোগীদের খুঁজে বের করে আনেন। তারা রোগীদের সুরক্ষার জন্য নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন। হাসপাতালে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজন এবং কর্মীরাও তাদের সাহায্য করেন।
তিনজন পুলিশকর্মী একে একে কয়েক ডজন রোগীকে নিরাপদে বাইরে বের করে আনেন। এই সময় আগুনের শিখা এবং তীব্র ধোঁয়া তাদেরও ঘিরে ধরছিল, কিন্তু তারা পিছপা হননি। তাদের সাহসের কারণে অনেক রোগীর জীবন বেঁচে যায়, যদিও অন্য আটজন রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
হাসপাতাল ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লাগে। পুলিশ কমিশনার বিজু জর্জ জোসেফ এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনজন পুলিশকর্মীকে গুরুতর শ্বাসকষ্টের কারণে এসএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
হাসপাতাল প্রশাসন পুলিশকর্মীদের সাহসিকতাকে সর্বোচ্চ সম্মানের সাথে প্রশংসা করেছে। প্রশাসন জানিয়েছে যে তাদের সাহস অনেক রোগীর জীবন বাঁচাতে নির্ণায়ক প্রমাণিত হয়েছে।