রাতের অন্ধকারেই অভিযান, হাটগাছার জোধ ভীম রোডে হানা সাইবার থানার
দক্ষিণ ২৪ পরগনার হাটগাছা অঞ্চলের জোধ ভীম রোডে বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে হঠাৎ করেই কলকাতা পুলিশের তরফে চাঞ্চল্যকর অভিযান চালানো হয়। কলকাতা সাইবার থানার নেতৃত্বে এক যৌথ বাহিনী হানা দেয় একটি অবৈধভাবে পরিচালিত কল সেন্টারে। নির্দিষ্ট গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই ঝটিকা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
দু’ডজন মোবাইল, কম্পিউটার, হেডসেট উদ্ধার, খোঁজ মিলল সফটওয়্যার ও রিমোট অ্যাকসেস ডেটার
অভিযানে উঠে এল একাধিক প্রমাণ—২৪টি মোবাইল ফোন, ২২টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক, ২টি রাউটার, ৬টি হেডসেট এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। পাওয়া গিয়েছে কাস্টমার ডেটা, ডায়ালার সফটওয়্যার, স্ক্রিনশট, কল লিডস এবং রিমোট অ্যাকসেস সংক্রান্ত বহু তথ্য। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রযুক্তি নির্ভর প্রতারণার এক অজানা দিক সামনে এসেছে বলে মনে করছে পুলিশ।
চক্রের মূল মাথা ওয়াদুদ আহমেদ, সঙ্গে ছিল হ্যান্ডলার মজিদ—ধরা পড়ল সবাই
এই চক্রের মূল চালক হিসাবে গ্রেফতার করা হয়েছে ওয়াদুদ আহমেদ নামক ব্যক্তিকে। পাশাপাশি হ্যান্ডলার মজিদ-সহ মোট ১৮ জনকে হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ। তারা সকলে ওই কল সেন্টার থেকে জালিয়াতির কাজ করছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বড় চক্রের হদিশ মিলতে পারে বলে মনে করছে তদন্তকারী অফিসাররা।
ভোররাতে ঝটিকা অভিযান, এলাকায় চাঞ্চল্য—সিল করে দেওয়া হল পুরো কলসেন্টার
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ডিটেকটিভ টিম এবং স্থানীয় থানার সহযোগিতায় এই অভিযানের সময় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হাটগাছার এই জনবহুল অঞ্চলে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আচমকা ঢুকে পড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী। কল সেন্টারটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকেই প্রথমে বুঝতেই পারেননি কী ঘটছে, তারপর ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
দেশজুড়ে প্রতারণা চালাত এই চক্র! খোঁজ চলছে আরও অভিযুক্তদের
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই অবৈধ কল সেন্টারটি ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নাগরিকদের ফোন করে প্রতারণা চালানো হতো। কখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আপডেটের নাম করে, কখনও লোন অফার বা রিওয়ার্ড পয়েন্টের লোভ দেখিয়ে তাঁদের ডেটা হাতিয়ে নেওয়া হত। পুলিশ খতিয়ে দেখছে, এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত।
পুলিশের বক্তব্য ‘বিশ্বস্ত সূত্রে মিলেছিল খবর, সফল হয়েছে অভিযান’
কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বস্ত সূত্রের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়। ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকরা দীর্ঘদিন ধরে নজর রাখছিলেন। অবশেষে গতকাল রাতে সফলভাবে অভিযান চালিয়ে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে যা যা উদ্ধার হয়েছে, তা তদন্তে বড় সাহায্য করবে বলে আমরা আশাবাদী।
তদন্ত চলছে, আরও জড়িতদের খোঁজে পুলিশ, আদালতে পেশ করা হবে অভিযুক্তদের
গ্রেফতার হওয়া ১৮ জনকে শীঘ্রই আদালতে পেশ করা হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জেরা করা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই চক্রটি শুধু রাজ্যে নয়, দেশের অন্য রাজ্যেও তাদের প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল। ইতিমধ্যে অন্যান্য রাজ্যের সাইবার সেলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।