কোটা জেলার মণ্ডানিয়া গ্রামে জরাজীর্ণ সরকারি স্কুলের ৭৮ জন শিশুর পড়াশোনা এখন মন্দিরের প্রাঙ্গণে চলছে। শিক্ষা বিভাগ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন স্কুল তৈরির আশ্বাস দিয়েছে।
কোটা: রাজস্থানের কোটা জেলার মণ্ডানিয়া গ্রামের राजकीय উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছে। পাঁচ কক্ষ এবং স্কুল অফিসের ছাদগুলি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। বর্ষাকালে এই কক্ষগুলিতে পড়াশোনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শিক্ষা বিভাগ স্কুল ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। বর্তমানে ৭৮ জন শিশুর পড়াশোনা গ্রামের লোকদেবতা ফাফুজি মহারাজের মন্দিরের প্রাঙ্গণে চলছে, যাতে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা বিঘ্নিত না হয়।
জরাজীর্ণ স্কুল শিশুদের জন্য হয়ে উঠেছে বিপদ
মণ্ডানিয়া গ্রামের প্রাক্তন सरपंच রাম কল্যাণ নাগর-এর মতে, স্কুল ভবনটি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রশাসনের সময়ের তৈরি এবং এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছে। বর্ষায় ছাদ থেকে জল পড়তে শুরু করে, যার ফলে শিশুদের জন্য শ্রেণিকক্ষগুলি ব্যবহারযোগ্য থাকছে না। স্কুলে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ এবং একটি অফিস রয়েছে, কিন্তু এগুলি নিরাপদে ব্যবহার করা যায় না।
গ্রামের শিক্ষক এবং প্রশাসন সমস্যাটি স্থানীয় বিধায়ক এবং শিক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছেছে। শিক্ষা বিভাগ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে এবং শীঘ্রই নতুন ভবন তৈরির আশ্বাস দিয়েছে। বর্তমানে শিশুদের পড়াশোনা সুরক্ষিত রাখতে মন্দিরের চত্বরে অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
মন্দিরে শিশুদের পড়াশোনা নিরাপদ এবং সুশৃঙ্খল
স্কুলের শিক্ষিকা প্রীতি সোনি জানিয়েছেন যে মন্দিরের প্রাঙ্গণে টিনশেডের নিচে শিশুদের বসিয়ে পড়ানো হচ্ছে। এতে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং পড়াশোনা নিয়মিতভাবে চলছে। মন্দিরের চত্বরে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে শিশুদের অসুবিধা না হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে স্কুলে প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং রেকর্ডগুলি এখনও জরাজীর্ণ ভবনের অফিসে রাখা আছে। নতুন স্কুল ভবন তৈরি হয়ে গেলে, অফিসটি একটি অস্থায়ী ভাড়াবাড়িতে স্থানান্তরিত করা হবে। এর জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রশাসনিক কাজও নিরাপদে চলতে পারে।
শিশুদের নিরাপত্তা এবং পড়াশোনা অগ্রাধিকার
মণ্ডানিয়া গ্রামের স্কুলে পড়া শিশুরা জানিয়েছে যে মন্দিরে পড়াশোনা করতে তাদের নিরাপদ মনে হয়। ৭৮ জন ছাত্রের জন্য এই অস্থায়ী ব্যবস্থাটি স্বস্তিদায়ক প্রমাণিত হয়েছে। শিক্ষকরা শিশুদের নিরাপত্তা এবং পড়াশোনা উভয় দিকেই পুরো মনোযোগ দিচ্ছেন।
স্কুলের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে এবং যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই শিশু এবং অভিভাবকরা শিক্ষা বিভাগের কাছে নতুন স্কুল ভবন তৈরির আবেদন জানিয়েছেন। তাদের মতে, নতুন ভবনে গেলে পড়াশোনা আরও সুশৃঙ্খল এবং নিরাপদ হবে।
ছাত্রীদের সরকারের কাছে অনুরোধ
স্কুলে পড়া ছাত্রী রাধিকা নায়ক এবং ইশিকা প্রজাপতি জানিয়েছেন যে তারা পুরানো জরাজীর্ণ ভবনে পড়তে গিয়ে সবসময় ভয়ে থাকত। এখন মন্দিরে পড়াশোনা হওয়ায় তারা নিরাপদ বোধ করছে, কিন্তু তাদের স্বপ্ন হলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নতুন স্কুল তৈরি হোক।
ছাত্রীরা সরকারকে অনুরোধ করেছে যে নতুন ভবন তৈরি হওয়ার সাথে সাথেই যেন তারা তাদের নিয়মিত স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এতে কেবল তাদের শিক্ষার মানই বাড়বে না, পড়াশোনার ধারাবাহিকতাও নিশ্চিত হবে।