লখনউয়ের বেহটা বিস্ফোরণ কাণ্ডে পুলিশ ২৫-২৫ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষিত চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ৩১শে আগস্টের বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং বাড়িটিতে অবৈধ বিস্ফোরক মজুত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছিল।
লখনউ: উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ের গুডম্বা থানা এলাকার বেহটা গ্রামে ৩১শে আগস্ট হওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণ কাণ্ডে পুলিশ বড় সাফল্য অর্জন করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে পলাতক চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের উপর ২৫-২৫ হাজার টাকা করে পুরস্কার ঘোষিত ছিল। এই বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং বাড়িটিতে অবৈধ বিস্ফোরক মজুত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছিল।
চার পলাতক অভিযুক্তের গ্রেফতার
পুলিশ মৌর্য ভাট্টার কাছে অভিযান চালিয়ে চার পলাতক অভিযুক্তকে ধরে ফেলে। এই অভিযুক্তদের পরিচয় হল শানু ওরফে শোয়েব, মহম্মদ ওয়ারিস ওরফে শেরু, আলি আকবর এবং মহম্মদ আফজাল। পুলিশ জানিয়েছে যে এদের গ্রেফতার করা দীর্ঘ সময় ধরে চ্যালেঞ্জিং ছিল, কিন্তু গোপনসূত্রের খবরের ভিত্তিতে তাদের ধরতে সাফল্য পাওয়া গেছে।
পুলিশের মতে, অভিযুক্তদের কার্যকলাপের উপর নিরন্তর নজর রাখা হচ্ছিল। বিশেষ দলগুলি জাল বিছিয়ে অভিযুক্তদের কার্যকলাপের জন্য অপেক্ষা করেছিল। এর আগে এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। এখন চারজনের গ্রেফতারির ফলে পুরো ঘটনার তদন্ত আরও গতি পেয়েছে।
বিস্ফোরণে চারজনের মৃত্যু এবং অনেকে আহত
৩১শে আগস্ট বেহটা গ্রামে হঠাৎ হওয়া তীব্র বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। বাড়িটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় এবং আশেপাশের বাড়ির জানলা ও দেওয়ালও কেঁপে ওঠে। এই ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে আহত হন। পুলিশ ও দমকল বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকার্য শুরু করে।
তদন্তের সময় এও জানা যায় যে বাড়িটিতে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণে বারুদ ও বিস্ফোরক সামগ্রী রাখা ছিল। বিডিডিএস (BDDS) টিম ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকগুলি নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করে। এই বিস্ফোরণে এলাকায় ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল এবং পুলিশের তৎপরতার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
গ্রেফতারির ফলে বিস্ফোরণ কাণ্ডের ষড়যন্ত্র ফাঁস
পুলিশের মতে, ধৃত অভিযুক্তদের পুরো অবৈধ বিস্ফোরক ব্যবসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ঘাটনের সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে কোথা থেকে বিস্ফোরক সরবরাহ করা হত এবং এর ব্যবহার বা বিক্রি কোথায় হওয়ার কথা ছিল।
বিশেষ তদন্তকারী দল অভিযুক্তদের সঙ্গে জড়িত নেটওয়ার্ক এবং অন্যান্য সহযোগীদের শনাক্ত করতেও ব্যস্ত। তদন্ত আধিকারিকরা বলছেন যে এই গ্রেফতারির ফলে বিস্ফোরণ কাণ্ডের পিছনের পুরো ষড়যন্ত্র ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে অন্য কোনো সম্ভাব্য বিস্ফোরণ রোধ করার জন্য এটি একটি বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।
গোপনসূত্রের খবর এবং প্রযুক্তির সাহায্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার
গুডম্বা থানা পুলিশ এই গ্রেফতারিতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে। অভিযুক্তদের অবস্থান ট্র্যাক করার জন্য গোপনসূত্রের খবর এবং প্রযুক্তিগত পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে যে এই অভিযুক্তদের কার্যকলাপের উপর নিরন্তর নজর রাখা হচ্ছিল।
পুলিশ এখন পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে এবং অবৈধ বিস্ফোরক প্রস্তুতকারক অন্যান্য গোষ্ঠীর সন্ধানেও ব্যস্ত। প্রশাসন জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের খবর অবিলম্বে পুলিশকে দেওয়ার আবেদন করেছে। এই গ্রেফতারির ফলে এলাকায় নিরাপত্তার আস্থা বেড়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তিও দেখা দিয়েছে।