লখনউতে রিকভারি এজেন্টের নৃশংস হত্যা: পরকীয়া ও আর্থিক বিবাদের যোগসূত্র উন্মোচিত

লখনউতে রিকভারি এজেন্টের নৃশংস হত্যা: পরকীয়া ও আর্থিক বিবাদের যোগসূত্র উন্মোচিত

লখনউতে রিকভারি এজেন্টের হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম-সম্পর্কের জেরে এজেন্সি অপারেটর তার সঙ্গীকে দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে।

লখনউ: রাজধানী লখনউয়ের বंथরা এলাকায় রিকভারি এজেন্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে প্রেম-সম্পর্ক এবং পারস্পরিক বিবাদের কাহিনী সামনে এসেছে। পুলিশ এই ঘটনার কিনারা করে এজেন্সি অপারেটর এবং তার কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তদন্তে জানা গেছে যে এজেন্সি অপারেটর তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নিজের কর্মচারীকেই খুনের জন্য রাজি করিয়েছিল। এই ঘটনা পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

প্রেম-সম্পর্কের জেরে এজেন্সি মালিকের খুনের পরিকল্পনা

বান thrার ডেসটিনি কলোনির বাসিন্দা ২৬ বছরের কুনাল শুক্লার মৃতদেহ মঙ্গলবার দাদুপুর স্থিত অফিসে রক্তে ভেজা অবস্থায় পাওয়া যায়। মাথা ও মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা থেকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় কুনালের পরিবার এজেন্সি অপারেটর বিবেক সিংয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে।

পুলিশি তদন্তে স্পষ্ট হয় যে বিবেক সিংয়ের স্ত্রী এবং কুনাল শুক্লার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এই বিষয়টি বিবেক সহ্য করতে পারছিল না এবং সে কুনালের ওপর ক্রমাগত ক্ষুব্ধ ছিল। স্ত্রীর সঙ্গে এই বিবাদ তার বদনামের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং এই কারণেই সে তার কর্মচারী ওয়াসিম আলীকে খুনের জন্য রাজি করিয়েছিল।

ঋণের বিবাদ এবং লোভে ওয়াসিম কুনালের খুন করে

তদন্তের সময় এও জানা যায় যে ওয়াসিম এবং কুনালের মধ্যে আর্থিক লেনদেন চলছিল। কুনাল টাকা ফেরত না দেওয়ায় ওয়াসিম আগে থেকেই ক্ষুব্ধ ছিল। বিবেক এই ক্ষোভের সুযোগ নিয়ে তাকে খুনের জন্য প্ররোচিত করে এবং বিনিময়ে বাড়ি দেওয়ার লোভ দেখায়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিবেক অফিসেই আগে থেকে একটি সাবল রেখে দিয়েছিল। ঘটনার রাতে সে ওয়াসিমকে খবর দেয় যে কুনাল একা আছে। সুযোগ বুঝে ওয়াসিম অফিসে পৌঁছে এবং কুনালের ওপর সাবল দিয়ে আঘাত করে তাকে খুন করে। খুনের পর অস্ত্র ফেলে এবং কাপড় লুকিয়ে সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

খুনের অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

ঘটনার পর পুলিশ বंथরা থানা এবং সার্ভেলেন্স টিমকে তদন্তের কাজে লাগায়। সিসিটিভি ফুটেজ এবং কল ডিটেল থেকে জানা যায় যে খুনের আগে বিবেক এবং ওয়াসিমের মধ্যে কথা হয়েছিল। এছাড়াও, ওয়াসিমের অবস্থানও ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পাওয়া যায়। এই প্রমাণগুলো পুলিশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হিসেবে প্রমাণিত হয়।

যখন দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন তারা প্রমাণের চাপে ভেঙে পড়ে এবং অপরাধ স্বীকার করে নেয়। পুলিশ ওয়াসিমের সূত্র ধরে রক্তে ভেজা কাপড়, খুনের অস্ত্র এবং নালায় ফেলে দেওয়া মোবাইলও উদ্ধার করে। এরপর দুই অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়।

বিবেকের অপরাধমূলক অতীত

পুলিশি তদন্তে জানা গেছে যে বিবেক সিং এর আগেও অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিল। ২০১২ সালে সে সরোজনি নগর এলাকায় একটি খুনের মামলায় জেলে গিয়েছিল। এছাড়াও বंथরা থানায় তার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এবার ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং আর্থিক বিবাদ তাকে আবার অপরাধের পথে ঠেলে দিয়েছে।

ঘটনার সময় বিবেক এবং ওয়াসিম ঘটনাস্থলের কাছেই উপস্থিত ছিল। পুলিশ যখন সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করে, তখন স্পষ্ট হয় যে বিবেক সুপরিকল্পিতভাবে কুনালকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। বর্তমানে দুই অভিযুক্ত জেলে আছে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

Leave a comment