মধ্য প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ২৫২ জনের প্রাণহানি

মধ্য প্রদেশে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ২৫২ জনের প্রাণহানি

মধ্য প্রদেশে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে এ পর্যন্ত ২৫২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। শত শত পশু মারা গেছে এবং বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

MP News: মধ্য প্রদেশে এই বছরের বর্ষা এ পর্যন্ত ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে এসেছে। গত প্রায় ৪০ দিনের মুষলধারে বৃষ্টিতে রাজ্যের অনেক অংশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিতে ৪৭ জন, নদী-নালায় ডুবে ১৩২ জন, বজ্রপাতে ৬০ জন এবং দেওয়াল, বাড়ি বা গাছ চাপা পড়ে ১৩ জন মারা গেছে।

পশু হানি এবং উদ্ধার অভিযান

বৃষ্টির কারণে শুধু মানুষের প্রাণহানিই ঘটেনি, ৪৩২টি গবাদি পশু এবং ১২০০টি মুরগিও মারা গেছে। উদ্ধারকাজে নিযুক্ত এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ দলগুলো এ পর্যন্ত ৪৩২টি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে। এই অভিযানগুলোর মাধ্যমে ৩৬২৮ জন নাগরিক এবং ৯৪টি গবাদি পশুকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। এই কাজ ভোপাল, গোয়ালিয়র, জবলপুর এবং ধারের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় বিশেষভাবে করা হয়েছে।

ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছেন মানুষ

বর্তমানে রাজ্যজুড়ে ৫৩টি ত্রাণ শিবির পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে ৩০৬৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এই শিবিরগুলোতে খাদ্য, জল, ওষুধ, কাপড় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের প্রচেষ্টা হলো কোনো ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিক যেন কোনো প্রকার অসুবিধায় না পড়ে।

বাড়িঘরেরও ক্ষতি

সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১২৮টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে ২৩৩৩টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বাড়িগুলোর মালিকদের ক্ষতির পূরণ করার জন্য সার্ভে করে সহায়তা রাশি দেওয়া হচ্ছে।

ত্রাণ রাশি বিতরণ জারি

মুখ্যমন্ত্রী ড. মোহন যাদবের সভাপতিত্বে জেলা কালেক্টরদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হওয়া বৈঠকে জানানো হয়েছে যে এ পর্যন্ত ২৮.৪৯ কোটি টাকা ত্রাণ রাশি হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও, সরকার ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য ৩৬০০ কোটি টাকার রাশি নির্ধারণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে সার্ভের কাজ দ্রুত করে প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে সহায়তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেওয়া হোক।

অতিবৃষ্টিতে গ্রামীণ রাস্তার ক্ষতি

বর্তমান পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রদেশে এ পর্যন্ত ৭১১.৩ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৯ শতাংশ বেশি। এর ফলে ৪০টি জেলায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই ভারী বৃষ্টির কারণে ২৫৪টি গ্রামীণ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়েছে।

প্রদেশ সরকার পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে ত্রাণ কাজে কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না। উদ্ধার কাজে নিযুক্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ক্রমাগত ফিল্ডে থেকে নজরদারি করছেন।

Leave a comment