বয়ঃসন্ধি পার করলেও অনেকেরই ব্রণ বা ফুসকুড়ির সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে না। বিশেষ করে চাকরি, পড়াশোনা বা ব্যক্তিগত জীবনের চাপ বাড়লে মুখে হঠাৎ ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়।
ত্বকে হরমোনের প্রভাব বাড়ায় স্ট্রেসগবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানসিক চাপের সময় শরীরে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এই হরমোন সেবাসিয়াস গ্রন্থিকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনে প্ররোচিত করে, যার ফলে রোমকূপ বন্ধ হয়ে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। শুধু তাই নয়, কর্টিসল ত্বকের ইমিউন প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়, ফলে ব্যাকটেরিয়া সহজে বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের ইতিমধ্যেই ত্বক তৈলাক্ত, তাদের ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরও তীব্র হয়।
উদ্বেগ ও ব্রণ—দুটি সমস্যাই বাড়ায় একে অপরকে
ব্রণ দেখা দিলে অনেকের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়, যা আবার সামাজিক অস্বস্তি ও উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। এই মানসিক চাপ নতুন করে হরমোনের মাত্রা বাড়ায়, ফলে ব্রণ আরও বেড়ে যায়—এটাই ‘স্ট্রেস-অ্যাকনি সাইকেল’। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চক্র ভাঙতে শুধু ওষুধ নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও সমান জরুরি। কিছু ক্ষেত্রে মানসিক পরামর্শদান বা থেরাপি এই চক্র থামাতে কার্যকর হতে পারে।
জীবনযাপনে ছোট পরিবর্তনেই আসতে পারে বড় ফল
বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়ামের পরামর্শ দিচ্ছেন। পর্যাপ্ত ও নিরবচ্ছিন্ন ঘুম, সুষম খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত পানি পান ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মেডিটেশন, যোগাসন, কিংবা আঁকাআঁকি বা বই পড়ার মতো শখের কাজ মানসিক চাপ কমায়। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খেলে ত্বকের প্রদাহ ও ব্রণ দুটোই কমে।
চিকিৎসা দরকার হলে দেরি করবেন না
যদি ব্রণ দীর্ঘদিন ধরে থাকে, প্রদাহজনিত হয় বা ব্যথা করে, তাহলে নিজে নিজে ওষুধ ব্যবহার না করে ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে ব্রণের চিকিৎসায় ওষুধের পাশাপাশি স্ট্রেস-ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান দেওয়া হয়। এই দ্বিমুখী পদ্ধতি দ্রুত ও স্থায়ী ফল দেয়। চিকিৎসকেরা সতর্ক করেছেন, ইন্টারনেট থেকে অজানা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে ত্বকের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।