মথুরার ইসলামপুর গ্রামে নাবালিকা মেয়েদের যৌন নির্যাতনকারী বাবাকে তার নিজের ছেলে এবং ভাইপো মিলে হত্যা করেছে। অভিযুক্ত যখন মেয়েদের জোর করে নিয়ে যেতে শুরু করে, তখন শিশুরা (ছেলে ও ভাইপো) রাগে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
মথুরা: উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলা থেকে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা সামনে এসেছে। এখানে একজন নাবালক ছেলে তার বাবাকে হত্যা করেছে, যার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নিজের দুই মেয়ের সাথে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। অভিযুক্ত বাবা যখন মেয়েদের জোর করে নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তখনই ছেলে এবং তার ভাইপো রাগে তার উপর হামলা করে। এই ঘটনাটি পুরো এলাকাকে নাড়িয়ে দিয়েছে এবং সমাজে এই প্রশ্ন উঠেছে যে, যখন পরিবারই অত্যাচারের শিকার হয়, তখন ন্যায়বিচারের সীমা কতদূর যায়?
ইসলামপুরে হৃদয় বিদারক ঘটনা
এই ঘটনাটি মথুরার কোসিকলাঁ এলাকার ইসলামপুর গ্রামের, যেখানে ৫৫ বছর বয়সী পবন চৌধুরী তার পরিবারের সাথে থাকত। গ্রামবাসীদের মতে, পবনের স্বভাব অত্যন্ত হিংসাত্মক ছিল এবং তার বিরুদ্ধে আগেও একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। জানা গেছে যে, সে মদ্যপ অবস্থায় প্রায়শই তার পরিবারের সাথে মারামারি করত এবং মেয়েদের যৌন হেনস্থাও করত।
নির্যাতিত মেয়েরা গত কয়েক মাস ধরে তাদের কাকা হরিশঙ্করের বাড়িতে থাকছিল যাতে তারা তাদের বাবার নিষ্ঠুরতা থেকে বাঁচতে পারে। কিন্তু অভিযুক্ত বাবা দীপাবলির পর সেখানে পৌঁছায় এবং দুই মেয়েকে জোর করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জিদ ধরল। এই সময়ে ঘটনাটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
ছেলে-ভাইপোর আক্রমণে বাবার মৃত্যু
বাবা যখন মেয়েদের টানার চেষ্টা করে তখন ঘরে উপস্থিত ১৫ বছর বয়সী ছেলে এবং ১৭ বছর বয়সী ভাইপো বাইরে বেরিয়ে আসে। দুজনেই বাবাকে আটকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু সে তাদের উপরই আক্রমণ করতে শুরু করে। এই ঝগড়ার মধ্যেই ছেলে এবং ভাইপো বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এই আক্রমণে পবনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকেরা সাথে সাথে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে এবং দুই নাবালক ছেলেকে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মেয়েরা বাবার বিরুদ্ধে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে।
পুলিশি তদন্তে উঠে এল পুরনো অপরাধ
পুলিশি তদন্তে এটিও সামনে এসেছে যে মৃত পবন আগেও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অজয় কৌশলের মতে, পবনের বিরুদ্ধে আগে তার স্ত্রী এবং মাকে হত্যারও সন্দেহ ছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চুরি, অপহরণ এবং শ্লীলতাহানির একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, দুই নাবালক অভিযুক্তকে শিশু-উন্নয়ন আইনের অধীনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং পুরো বিষয়টি শিশু বিচার বোর্ডের সামনে উপস্থাপন করা হবে।












