গ্রাহকদের বড় ধাক্কা মোবাইল রিচার্জে ফের বাড়ছে খরচ বছরের শেষে দাম বৃদ্ধির জোর সম্ভাবনা

গ্রাহকদের বড় ধাক্কা মোবাইল রিচার্জে ফের বাড়ছে খরচ বছরের শেষে দাম বৃদ্ধির জোর সম্ভাবনা

২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে ফের বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছেন দেশের কোটি কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী।সূত্র অনুযায়ী, দেশের একাধিক টেলিকম সংস্থা ফের রিচার্জ প্ল্যানের খরচ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির অভ্যন্তরীণ খবর বলছে, চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই ট্যারিফে আসতে পারে বড় পরিবর্তন। দাম বাড়লে মধ্যবিত্তের কপালে পড়বে চিন্তার ভাঁজ, বিশেষ করে যাঁরা রোজকার ইন্টারনেট ও কল পরিষেবায় নির্ভর করেন।

ট্যারিফ বৃদ্ধির সম্ভাবনা ১০-১২ শতাংশ, ইকোনমি রেঞ্জের উপরেও পড়বে প্রভাব

২০২৪ সালে একবার ট্যারিফ বেড়েছিল, এবার ২০২৫-এ ফের তার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।এবার দাম বাড়ার হার হতে পারে প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ। বিশেষ করে প্রিমিয়াম এবং মিড রেঞ্জ প্ল্যানগুলির ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধি বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। যারা বেশি ডেটা বা স্পিডের প্ল্যান ব্যবহার করেন, তাঁদের খরচ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। টেলিকম কোম্পানিগুলি ইতিমধ্যেই এই পরিবর্তনের রূপরেখা তৈরি করতে শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে।

মে মাসেই ৭৪ লক্ষ নতুন ব্যবহারকারী, বেড়েছে মোবাইল পরিষেবার চাহিদা

২০২৫ সালের মে মাসে মোবাইল পরিষেবা ব্যবহারে এসেছে রেকর্ড ভাঙা উত্থান।ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্ট বলছে, মে মাসেই ৭৪ লক্ষ নতুন সক্রিয় ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছেন, যা গত ২৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সক্রিয় মোবাইল ইউজারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৮ কোটিতে। এই তথ্য বলছে যে দেশের মোবাইল পরিষেবার বাজার আরও বিস্তৃত হচ্ছে, যার সুযোগ নিচ্ছে টেলিকম সংস্থাগুলিও।

শীর্ষে রিলায়েন্স জিও, এয়ারটেলও ছাড়ছে না দৌড়

রিলায়েন্স জিও-র একচ্ছত্র আধিপত্য স্পষ্ট হলেও এয়ারটেলও বাড়াচ্ছে নিজের জায়গা।রিপোর্ট বলছে, মে মাসেই জিওর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ৫৫ লক্ষ নতুন সক্রিয় গ্রাহক। এর ফলে জিওর মার্কেট শেয়ার পৌঁছেছে ৫৩ শতাংশে। অপরদিকে, এয়ারটেলও নতুন ১৩ লক্ষ গ্রাহক পেয়েছে এবং তাদের মার্কেট শেয়ার এখন ৩৬ শতাংশ। ভোডাফোন আইডিয়া যদিও প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।

সেকেন্ডারি সিম ব্যবহারকারীরাও ফিরেছেন, 5G নির্ধারণ করবে ভবিষ্যৎ দিশা

5G-এর প্রসার এবং কার্যকারিতাই এখন মোবাইল ব্যবহার বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হতে চলেছে।

একজন টেলিকম বিশেষজ্ঞের মতে, বহু গ্রাহক যারা আগে শুধু জরুরি প্রয়োজনে সেকেন্ডারি সিম ব্যবহার করতেন, তারাও এখন আবার সক্রিয় ব্যবহারকারী হয়ে উঠছেন। তবে ভবিষ্যতে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা নির্ভর করবে দেশের 5G কাঠামো এবং তার মানের উপর।

টিয়ার ভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ, এক প্ল্যান সবার জন্য নয়

'One size fits all' মডেল এবার বিদায় নিতে চলেছে, আসছে শ্রেণিভিত্তিক রিচার্জ প্ল্যান।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতের রিচার্জ প্ল্যান একরকম হবে না। বরং গ্রাহকের অবস্থান, ব্যবহারের ধরন এবং চাহিদার উপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে দাম। এই টিয়ার সিস্টেমে কেউ কম খরচে পরিষেবা পাবে, আবার কেউ হয়তো তুলনায় অনেক বেশি খরচে একই পরিষেবা পাবে।

গ্রাহকের ডেটা ব্যবহারে নজর, স্পিডের উপর নির্ভর করবে প্ল্যানের খরচ

কে কখন কতটা ডেটা ব্যবহার করছেন, তার ভিত্তিতেই আসতে পারে 'পার্সোনালাইজড প্ল্যান'।বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে রিচার্জ প্ল্যান নির্ধারণ করা হবে গ্রাহকের ডেটা খরচ, স্পিড চাহিদা ও নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সময়ের উপর ভিত্তি করে। অফিস আওয়ারে বেশি ডেটা ব্যবহারের জন্য বাড়তি খরচও চাপতে পারে পকেটে। যাঁরা কম ডেটা ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য অপেক্ষাকৃত সস্তা প্ল্যানও আসতে পারে।

Airtel কর্তার মন্তব্যে মিলছে ইঙ্গিত, গ্রাহকের উপর বোঝা বাড়বে?

Airtel-এর এমডি গোপাল ভিট্টলের মতে, পুরনো মডেল আর টিকবে না—তবে নতুন দাম কত হবে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। গোপাল ভিট্টল স্পষ্ট বলেছেন যে, ‘One size fits all’ মডেল আর কাজ করছে না, এবং পরিবর্তন একান্ত জরুরি। তবে এই পরিবর্তনের ফলে সাধারণ গ্রাহকের উপর ঠিক কতটা আর্থিক চাপ পড়বে, সেই নিয়ে Airtel কিংবা অন্যান্য সংস্থাগুলি এখনই কিছু জানাতে চায়নি।মোবাইল পরিষেবার দাম বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে দেশের কোটি কোটি ব্যবহারকারীর পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকা বেরিয়ে যাবে। এমন এক সময়ে যখন অনলাইন শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কর্মজীবনও নির্ভর করছে মোবাইল ইন্টারনেটের উপর, তখন এই দাম বৃদ্ধি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

Leave a comment