আগামী মাসে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে চলা ৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সম্ভাব্য সাক্ষাৎ হতে পারে। এই বৈঠকটি ভারত-মার্কিন সম্পর্কের তিক্ততা কমাতে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। উভয় নেতা ট্যারিফ এবং H1-B ভিসা-র মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
ASEAN Summit: মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত আয়োজিত ৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সাক্ষাতের উদ্দেশ্য হল ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি সাধন করা এবং ট্যারিফ ও H1-B ভিসার মতো অর্থনৈতিক বিষয়গুলিতে সমাধান খুঁজে বের করা। উভয় নেতার মধ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আলোচনা সহযোগিতার ইঙ্গিত দিয়েছে।
আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্ক
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে চলা এই সম্মেলনে ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ককে আবার সঠিক পথে আনার চেষ্টা করা হবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম নিশ্চিত করেছেন যে ট্রাম্প এই উপলক্ষে মালয়েশিয়া সফর করবেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদির অংশগ্রহণের প্রস্তুতিও পুরোদমে চলছে। এই বৈঠকটিকে উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরদার করার একটি উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পূর্ববর্তী আলোচনার ইঙ্গিত
সম্প্রতি মোদি এবং ট্রাম্পের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা উভয় দেশের সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছে। এই আলোচনার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায় কারণ এর আগে মার্কিন সরকার ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করেছিল। তা সত্ত্বেও, উভয় নেতা এই আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। এছাড়াও ইউক্রেনে চলমান সংঘাত নিয়েও আলোচনা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী মোদির ৭৫তম জন্মদিনের প্রাক্কালে ট্রাম্পের করা ফোন কলটিও এই প্রক্রিয়ার অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি টুইট করে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান এবং ভারত-মার্কিন ব্যাপক ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ট্যারিফ এবং H1-B ভিসার আলোচনা
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে গত কিছুদিন ধরে ট্যারিফ এবং H1-B ভিসার মতো বিষয়গুলিতে মতভেদ বিদ্যমান। মার্কিন সংস্থাগুলি ভারতীয় পণ্যের উপর উচ্চ ট্যারিফ আরোপ করেছে, যেখানে ভারত তার উচ্চ প্রযুক্তিগত এবং পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিতে আমেরিকার স্বার্থ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আসিয়ান সম্মেলনে এই বিষয়ে সমাধান খুঁজে বের করার আশা করা হচ্ছে।
H1-B ভিসা ভারতীয় প্রযুক্তিগত এবং আইটি পেশাদারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত বছরগুলিতে আমেরিকা H1-B ভিসার নিয়মে অনেক পরিবর্তন এনেছে, যার ফলে ভারতীয় পেশাদারদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এই বৈঠকে এই সমস্যা নিয়েও উভয় দেশের মধ্যে ঐকমত্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিনিয়োগ এবং ব্যবসার উপর প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই বৈঠকে ট্যারিফ এবং H1-B ভিসার মতো বিতর্কিত বিষয়গুলিতে ঐকমত্য হয়, তবে উভয় দেশের ব্যবসা এবং বিনিয়োগ সম্পর্কে উন্নতি আসবে। মার্কিন সংস্থাগুলির জন্য ভারতীয় বাজার এবং ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে। এই বৈঠকের প্রভাব স্টক মার্কেট এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের উপরও পড়তে পারে।
সম্ভাব্য ফলাফল
কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, আসিয়ান সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সাক্ষাতের ফলে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। ট্যারিফ কমানো এবং H1-B ভিসার নিয়মে উন্নতির মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হবে।