দিল্লিতে বায়ু দূষণ গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। পরিছন্ন বাতাসের দাবিতে ইন্ডিয়া গেটে বিক্ষোভের পর পুলিশের পদক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক বেড়েছে। রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন যে, পরিছন্ন বাতাস চাওয়া মানুষের সাথে কঠোর আচরণ কেন করা হলো।
নয়াদিল্লি: দিল্লিতে বায়ু দূষণ ক্রমাগত গুরুতর পর্যায়ে রয়েছে। এই দূষণের প্রভাব দিল্লি এবং আশেপাশের অঞ্চলে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর পড়ছে। ধোঁয়াশা এবং বিষাক্ত বাতাসের মধ্যে শ্বাস নেওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও তীব্র হয়েছে। বিরোধীরা সরকারের কাছে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। এর মাঝেই কংগ্রেস সাংসদ এবং বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী একটি বড় প্রশ্ন তুলেছেন যে, পরিছন্ন বাতাস চাওয়া মানুষের সাথে কেন অপরাধীদের মতো আচরণ করা হচ্ছে।
রাহুল গান্ধী সরকারের উপর নিশানা
রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্ট শেয়ার করে বলেছেন যে, পরিছন্ন বাতাসে শ্বাস নেওয়া প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার। তিনি লিখেছেন যে, ভারতের সংবিধান শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অনুমতি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে এটি বোঝা জরুরি যে, যারা শুধু পরিছন্ন বাতাস এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশের দাবি করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ কেন নেওয়া হলো।
রাহুল গান্ধী বলেছেন যে, বায়ু দূষণের কারণে কোটি কোটি মানুষ প্রভাবিত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি শিশু এবং প্রবীণদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যে বাতাসে তারা শ্বাস নিচ্ছেন, সেটাই তাদের শরীরের ক্ষতি করছে। তার বক্তব্য, এটি শুধুমাত্র স্বাস্থ্যের প্রশ্ন নয়, দেশের ভবিষ্যতেরও প্রশ্ন।
“ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসা সরকার জনগণের পরোয়া করে না”
রাহুল গান্ধী ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারা জনগণের সমস্যাগুলি বুঝতে এবং সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেছেন যে, যে সরকার “ভোট চুরি” করে ক্ষমতায় এসেছে, তারা জনগণের পরোয়া করতে পারে না।

তার মতে, দূষণ এমন একটি সংকট যার প্রভাব ধীরে ধীরে সমগ্র সমাজে দেখা যায়। এর ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হয়। তাই, এই সমস্যা সমাধানে দেরি করা দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।
ইন্ডিয়া গেটে বিক্ষোভের ঘটনা
দিল্লিতে বায়ু দূষণ নিয়ে গতদিন অনেক নাগরিক ইন্ডিয়া গেটে মিছিল বের করেছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল যে, সরকার এই সমস্যার উপর অবিলম্বে মনোযোগ দিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেক যুবক, ছাত্র এবং সামাজিক কর্মী অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
কিন্তু দিল্লি পুলিশ এই বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে। এই পদক্ষেপের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে, যখন মানুষ তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করছিলেন, তখন তাদের সাথে অপরাধীদের মতো আচরণ কেন করা হলো। এই বিষয়টিই রাহুল গান্ধী তুলে ধরেছেন।
দিল্লি পুলিশের জবাব
নয়াদিল্লির ডিসিপি দেবেশ কুমার মাহলা বলেছেন যে, ইন্ডিয়া গেট ধর্না দেওয়ার নির্ধারিত জায়গা নয়। দিল্লিতে যে কোনও প্রকারের ধর্না বা প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্য যন্তর-মন্তরকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। পুলিশের মতে, বিক্ষোভকারীদের আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, ইন্ডিয়া গেটে প্রতিবাদের অনুমতি নেই।
পুলিশের বক্তব্য, ইন্ডিয়া গেট একটি জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ যেখানে মানুষ তাদের পরিবারের সাথে ঘুরতে আসে। যে কোনও প্রতিবাদ সেখানে শৃঙ্খলাকে প্রভাবিত করে এবং নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হতে পারে। তাই, নিয়ম অনুযায়ীই বিক্ষোভকারীদের আটক করা হয়েছে।













