मुंबई পুলিশ তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযানে ১২ হাজার কোটি টাকার এমডি ড্রাগস উদ্ধার করে দেশের বৃহত্তম মাদক পাচার চক্রের পর্দাফাঁস করেছে। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে যে ড্রাগ মাফিয়ারা নতুন প্রজন্মের তরুণদের, অর্থাৎ Gen Z-কে লক্ষ্য করার জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ইমোজি এবং কোড ওয়ার্ড ব্যবহার করে ডিলিং করছিল।
মুম্বাই সংবাদ: মুম্বাইয়ের কাছে মীরা ভাইন্দর পুলিশ মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযান চালিয়ে দেশের বৃহত্তম মাদক পাচার চক্রের পর্দাফাঁস করেছে। অভিযানে ১২ হাজার কোটি টাকার এমডি ড্রাগস এবং প্রায় ৩২ হাজার লিটার রাসায়নিক উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশি তদন্তে জানা গেছে যে এই নেটওয়ার্কটি দক্ষিণ ভারতে সক্রিয় ছিল এবং মাদক ব্যবসায়ীরা Gen Z-এর সাথে ইমোজি ও কোড ওয়ার্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মাদকদ্রব্যের ডিলিং করত, যাতে তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে বিভ্রান্ত করা যায়।
মীরা ভাইন্দরে ১২ হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার
মুম্বাইয়ের কাছে মীরা ভাইন্দর পুলিশ তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অভিযানে ১২ হাজার কোটি টাকার এমডি ড্রাগস উদ্ধার করেছে। এই অভিযানটি তেলেঙ্গানার চেরাপল্লি অঞ্চলে চলছিল একটি অবৈধ কারখানায়, যেখানে প্রচুর পরিমাণে মাদকদ্রব্য তৈরি করা হচ্ছিল। পুলিশ এই কারখানা থেকে ৩২ হাজার লিটার রাসায়নিকও জব্দ করেছে।
এই ঘটনা দেশে মাদক ব্যবসার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। তদন্তকারী সংস্থাগুলোর মতে, এই মাদক পাচার চক্রের নেটওয়ার্ক কেবল দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও বিস্তৃত ছিল। উদ্ধারের পর পুলিশ আরও তদন্ত শুরু করেছে।
ইমোজি কোডের মাধ্যমে চলছিল মাদকদ্রব্যের ডিলিং
তদন্তে জানা গেছে যে মাদক মাফিয়ারা ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং চ্যাটিং অ্যাপ ব্যবহার করছিল। বিশেষ বিষয় হল, মাদকদ্রব্যের ডিলিং সম্পূর্ণরূপে ইমোজি কোডের মাধ্যমে হত, যাতে তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে বিভ্রান্ত করা যায়।
পুলিশের মতে, ইমোজির মাধ্যমে ওষুধের নাম, পরিমাণ, গুণমান, দাম এবং দেখা করার স্থান ঠিক করা হত। এই নতুন পদ্ধতিটি ‘Gen Z’ তরুণদের আকৃষ্ট করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, যাতে তারা সহজেই এই জালে জড়িয়ে পড়ে।
এই প্রথম এত বড় মাদকদ্রব্যের ভান্ডার উদ্ধার
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে এই প্রথম এত বড় পরিমাণে মাদকদ্রব্য এবং কোডেড নেটওয়ার্ক একসাথে ধরা পড়েছে। পুলিশের সন্দেহ, পুরো চক্রটি দক্ষিণ ভারত হয়ে বিদেশে সক্রিয় ছিল এবং এর শিকড় আন্তর্জাতিক পাচারের সাথে যুক্ত থাকতে পারে।
উদ্ধারের পর পুলিশ ক্রমাগত অভিযান চালাচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত অনেককে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই পুরো নেটওয়ার্কে একাধিক রাজ্যের মানুষের জড়িত থাকার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের গভীর উদ্বেগ
মাদক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ইমোজির আড়ালে চলা এই ব্যবসা তরুণদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করছে। এই পদ্ধতি মাদক জগৎকে আরও বিপজ্জনক করে তুলছে, কারণ এতে শনাক্তকরণ অত্যন্ত কঠিন হয়।
পুলিশ অভিভাবকদের কাছে আবেদন করেছে যে তারা যেন তাদের সন্তানদের অনলাইন কার্যকলাপের উপর নজর রাখে। কর্মকর্তাদের মতে, আগামী দিনগুলোতে এই মামলার সাথে জড়িত আরও বড় তথ্য উন্মোচিত হতে পারে।