মুম্বইয়ে বাবা-দাদাকে ছুরিকাঘাত করে খুন, ২৩ বছরের ছেলে আত্মসমর্পণ

মুম্বইয়ে বাবা-দাদাকে ছুরিকাঘাত করে খুন, ২৩ বছরের ছেলে আত্মসমর্পণ

মুম্বইয়ের আন্ধেরি পূর্বে এক ২৩ বছর বয়সী ছেলে তার বাবা ও দাদাকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে। ঘটনার সময় চাচা গুরুতর আহত হন। হত্যার পর অভিযুক্ত ছেলেটি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।

মুম্বই: আন্ধেরি পূর্বের তক্ষশীলা এলাকায় একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২৩ বছর বয়সী এক ছেলে তার বাবা ও দাদাকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে। পুলিশের মতে, বাবা এবং দাদা মদ্যপান করে ক্রমাগত গালাগালি ও গোলমাল করছিলেন, যার ফলে ক্ষুব্ধ ছেলেটি মাঝরাতে এই ভয়াবহ পদক্ষেপ নেয়। এই হামলায় ছেলেটি তার চাচাকেও গুরুতর আহত করেছে।

মহারাষ্ট্রে ছেলের হাতে বাবা-দাদার খুন

তথ্য অনুযায়ী, রাত আনুমানিক ২টা নাগাদ বাবা মদ্যপান করে ছেলের কাছে টাকা চাইছিলেন এবং ক্রমাগত গালাগালি করছিলেন। রাগ ও উত্তেজনার বশে ছেলেটি ধারালো ছুরি দিয়ে তার ৫২ বছর বয়সী বাবাকে হত্যা করে। এই সময় ৭৫ বছর বয়সী দাদা ছেলেটিকে শান্ত করার চেষ্টা করলে, ছেলেটি তাকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে।

হামলার সময় ৪৫ বছর বয়সী চাচাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, যিনি ঝগড়া থামাতে এসেছিলেন। ছেলেটি চাচার ওপরও হামলা করে, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। চাচার চিকিৎসা জোগেশ্বরীর ট্রমা কেয়ার হাসপাতালে চলছে।

আত্মসমর্পণের পর ছেলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা

হত্যা করার পর অভিযুক্ত ছেলেটি ছুরি নিয়ে এমআইডিসি (MIDC) পুলিশ স্টেশনে পৌঁছায় এবং নিজে আত্মসমর্পণ করে। ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কুপার হাসপাতালে পাঠায়। এর পাশাপাশি, ছেলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে ছেলেটি বাবা এবং দাদার মদ্যপান ও ক্রমাগত ঝামেলা করার কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং আশেপাশের লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে।

ঘটনা নিয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যে চাঞ্চল্য

স্থানীয়দের বক্তব্য, এই ঘটনা এলাকায় সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। অনেক প্রতিবেশী জানান যে বাবা এবং দাদা প্রায়শই মদ্যপান করে বিবাদ করতেন, কিন্তু কেউ কল্পনাও করেননি যে পরিস্থিতি এত ভয়াবহ রূপ নেবে।

কিছু প্রতিবেশী বলেছেন যে ছেলেটি প্রায়শই ঘরের মধ্যে মানসিক চাপে ছিল এবং ক্রমাগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল। তারা আশা প্রকাশ করেছেন যে পুলিশ এই বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে সঠিক পদক্ষেপ নেবে।

মদ্যপান ও মানসিক চাপ থেকে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি

এটি কোনো প্রথম ঘটনা নয়। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকাতেও এক ছেলে তার বাবাকে ছুরি মেরে হত্যা করেছিল। সেই ঘটনায় দুজনেই মদ্যপান করে একসঙ্গে বসে কথা বলছিলেন। বিকেসি (BKC) পুলিশ সে সময় অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মদ্যপানের কারণে সৃষ্ট পারিবারিক বিবাদ প্রায়শই সহিংস ঘটনার রূপ নেয়। তারা বলেছেন যে পারিবারিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা এবং মদ্যপান নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

Leave a comment