রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দপ্তর নবান্নে ঢুকতে হলে এখন থেকে লাগবে বিশেষ অনুমতি। শুধু সাধারণ দর্শনার্থী নয়, এবার থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম জারি করল প্রশাসন। সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়াও তাঁদের জানাতে হবে, ঠিক কোথায় এবং কার কাছে যাচ্ছেন তাঁরা। ফলে, আর আগের মতো হুটহাট ঢোকা চলবে না।
১৪ তলায় সিভিক ভলান্টিয়ারের প্রবেশে কড়া সতর্কতা, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের নিরাপত্তায় প্রশ্ন
সম্প্রতি একটি অস্বস্তিকর ঘটনার জেরেই এই পদক্ষেপ। জানা গিয়েছে, এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার আচমকা নবান্নের ১৪ তলায় উঠে পড়েন—যেখানে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তর। ওই ফ্লোরে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল না। লিফটে প্রথমে ১৩ তলায় গিয়ে সিঁড়ি বেয়ে তিনি ১৪ তলায় ওঠেন। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এবং প্রশ্ন উঠে যায় প্রশাসনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার গাফিলতি নিয়ে।
ডিউটিরত পুলিশকর্মীদেরও এবার পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক, প্রতিদিনের তালিকা কেন্দ্রীভূত তদারকিতে
শুধু সিভিক নয়, এবার থেকে নবান্নে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদেরও নিয়ে এল কড়া নিয়ম। বলা হয়েছে, ডিউটির সময় তাঁদের স্পষ্টভাবে পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কোথায়, কে, কখন ডিউটি করছেন, তার বিস্তারিত তালিকা প্রতিদিন তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়ায় নজরদারি থাকছে ঘড়ির কাঁটার মতো নিখুঁত।
তমলুকের বাসিন্দা অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বেরোয় বিস্তারিত
ঘটনার সূত্রপাত যাঁর মাধ্যমে, সেই সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন তমলুকে। কীভাবে তিনি এতদূর ঢুকে পড়লেন, সেই প্রশ্ন তুলছে অনেকেই। যদিও পরে তাঁকে শিবপুর থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর কাছে কোনও বেআইনি বস্তু বা উদ্দেশ্যের প্রমাণ না মেলায় গ্রেফতার করা হয়নি, তবে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় প্রশাসনিক মহলে।
২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তাবেষ্টনীর ভিতরেও ফাঁক! জোরদার হচ্ছে স্ক্যানিং ও নজরদারি
নবান্নে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা বলয় থাকলেও, এই ঘটনার পরে আরও কড়া স্ক্যানিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সিসিটিভি নজরদারি আরও জোরদার করার পাশাপাশি, প্রতিটি লিফট ও সিঁড়ি পথেও অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে বলে সূত্রের খবর। এমনকী, প্রতিটি ফ্লোরে ঢোকার সময় ডিজিটাল লগ-ইন বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।
সাধারণ দর্শনার্থীদের ক্ষেত্রেও নতুন নিয়ম, ঢোকার আগে নাম, পরিচয় ও সময় লিখতে হবে রেজিস্টারে
যাঁরা ভিজ়িটর হিসেবে নবান্নে আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই কড়াকড়ি। আগে থেকে অনুমতি ছাড়া কেউ ঢুকতে পারবেন না। রেজিস্টারে নাম, পরিচয়পত্র, এবং কোন আধিকারিকের কাছে যাচ্ছেন—সেইসব তথ্য লিখে তারপরই মিলবে প্রবেশাধিকার। মূলত এই সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্য, নবান্নের মতো উচ্চ নিরাপত্তা জোনে আর কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে।