এনডিএ বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর জন্য সংকল্প পত্র প্রকাশ করেছে। এতে ১ কোটি চাকরি, মহিলা ও কৃষক প্রকল্প, শিল্প বিনিয়োগ, শিক্ষা সংস্কার এবং বিনামূল্যে সুবিধার মতো উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিহার এনডিএ ইশতেহার: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এনডিএ পাটনায় তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। এতে রাজ্যবাসীর জন্য কর্মসংস্থান, মহিলা, কৃষক এবং যুবকদের স্বার্থে বেশ কয়েকটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পের উল্লেখ করা হয়েছে। এই উপলক্ষে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং জেডিইউ, এলজেপি, হাম, আরএলএম-এর শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সংকল্প পত্রে বিহারের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণের জন্য তাঁদের প্রতিশ্রুতি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
এনডিএ-র সংকল্প পত্রে কর্মসংস্থান, শিল্প উন্নয়ন, কৃষি বিনিয়োগ, নগর সংযোগ, শিক্ষা এবং বিনামূল্যে সুবিধার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এই নথিটি বিহারের প্রতিটি শ্রেণীর মানুষের জন্য প্রকল্প এবং সুবিধার একটি নির্দেশিকা হিসেবে প্রমাণিত হবে।
বিহারের জন্য ১ কোটি চাকরির পরিকল্পনা
এনডিএ ১ কোটি সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর জন্য প্রতিটি জেলায় মেগা স্কিল সেন্টার স্থাপন করা হবে। বিহারকে একটি গ্লোবাল স্কিলিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যাতে যুবকরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।
মহিলাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মহিলা কর্মসংস্থান প্রকল্প চালু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে। 'মহিলা মিশন কোটিপতি' প্রকল্পের অধীনে চিহ্নিত মহিলা উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় সাফল্য এনে দেওয়ার জন্য বিশেষ কাজ করা হবে।
অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণীর বিভিন্ন পেশাদার গোষ্ঠীকে ১০ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। এর জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠিত হবে। কমিটি অত্যন্ত অনগ্রসর শ্রেণীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা মূল্যায়ন করবে এবং তাদের ক্ষমতায়নের জন্য সরকারকে পরামর্শ দেবে।
কৃষকরা পাবেন বার্ষিক সম্মান নিধি

কর্পূরী ঠাকুর কিষান সম্মান নিধির আওতায় প্রত্যেক কৃষককে বার্ষিক ৩,০০০ টাকা প্রদান করা হবে। মোট সুবিধা ৯,০০০ টাকা পর্যন্ত হবে।
কৃষি-অবকাঠামোতে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে, যা রাজ্যের কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং রপ্তানি বৃদ্ধি করবে। প্রধান ফসলগুলির এমএসপি (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) তে ক্রয় পঞ্চায়েত স্তরে নিশ্চিত করা হবে।
'মৎস্য-দুগ্ধ মিশন' প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্যচাষী কৃষকরা ৯,০৫০ টাকা লাভ পাবেন। বিহার দুগ্ধ মিশনের আওতায় প্রতিটি ব্লকে চিলিং এবং প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পাঁচটি মেগা ফুড পার্ক গড়ে তোলা হবে এবং কৃষি রপ্তানি দ্বিগুণ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ডাল উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা অর্জন করা এনডিএ-র উদ্দেশ্য।
শহরগুলিতে মেট্রো এবং নতুন বিমান পরিষেবা
এনডিএ-র সংকল্প পত্রে নগর সংযোগকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ৭টি নতুন এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করা হবে এবং ৩,৬০০ কিলোমিটার রেল ট্র্যাকের আধুনিকীকরণ করা হবে। অমৃত ভারত এক্সপ্রেস এবং নমো র্যাপিড রেল পরিষেবার সম্প্রসারণ করা হবে। চারটি নতুন শহরে মেট্রো পরিষেবা চালু করা হবে।
'নিউ পাটনা'তে একটি গ্রিনফিল্ড শহর নির্মাণ করা হবে। প্রধান শহরগুলিতে স্যাটেলাইট টাউনশিপ গড়ে তোলা হবে। মা জানকীর জন্মস্থানকে বিশ্বমানের আধ্যাত্মিক নগরী 'সীতাপুরম' হিসেবে বিকশিত করা হবে।
পাটনার কাছে গ্রিনফিল্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দ্বারভাঙ্গা, পূর্ণিয়া, ভাগলপুরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলা হবে। দশটি নতুন শহর থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবা শুরু করা হবে, যা ভ্রমণ এবং ব্যবসা উভয় ক্ষেত্রেই সুবিধা বৃদ্ধি করবে।
বিকশিত বিহার শিল্প মিশনের আওতায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে শিল্প বিপ্লব আনার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। বিকশিত বিহার শিল্প উন্নয়ন মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হবে। প্রতিটি জেলায় অত্যাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপন করা হবে এবং দশটি নতুন শিল্প পার্ক তৈরি করা হবে।
নিউ-এজ ইকোনমির অধীনে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ আকর্ষণ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এর ফলে রাজ্যে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং বিহারের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী হবে। এই পরিকল্পনাটি যুবক এবং উদ্যোক্তাদের জন্য বিশাল সুযোগ প্রদান করবে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিনামূল্যে পরিষেবা
এনডিএ বিনামূল্যে সুবিধার আওতায় জনগণের জন্য একাধিক সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে ১২৫ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং ৫০ লক্ষ নতুন পাকা বাড়ি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এগুলি দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে। প্রতিটি জেলায় আধুনিক স্কুল এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর ফলে যুবকরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং রাজ্যের দক্ষতা স্তর বৃদ্ধি পাবে।
 
                                                                        
                                                                            












