গাজা ভূখণ্ড দখলের জন্য ইজরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে অনুমোদন দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দখলের পর গাজার প্রশাসন কোনো আরব ফোর্সের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
Isreal-Gaza Update: ইজরায়েল ও গাজার মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান সংঘাত একটি নতুন মোড় নিয়েছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখন গাজা ভূখণ্ড দখল করতে প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে। সম্প্রতি রয়টার্সের প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ইজরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদ এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এই সিদ্ধান্তটি এমন সময়ে এসেছে যখন কয়েক দিন আগে নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে ইজরায়েল গাজা দখল করবে না।
প্রথমে অস্বীকার, এখন অনুমোদন
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল যে ইজরায়েল গাজার সরাসরি নিয়ন্ত্রণ চায় না এবং তারা এই অঞ্চলটিকে একটি অন্তর্বর্তী শাসনের হাতে হস্তান্তর করতে চায়। কিন্তু এখন নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা এর ঠিক বিপরীত। এর মানে হল যে ইজরায়েল এখন গাজার সেই অংশগুলি দখল করতে পারে যেখানে বর্তমানে হামাসের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
হামাসকে শেষ করার জন্য দখল জরুরি
৭ই আগস্ট ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে হামাসকে সম্পূর্ণরূপে শেষ করার জন্য গাজার সামরিক দখল জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন যে ইজরায়েলের উদ্দেশ্য গাজার শাসন করা নয়, বরং সেখানে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা যাতে ভবিষ্যতে কোনও সন্ত্রাসী সংগঠন সেখানে পুনরায় মাথা তুলতে না পারে।
গাজার ভবিষ্যৎ: কে নেবে দায়িত্ব
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, যদি ইজরায়েল গাজা দখল করে, তবে পরবর্তীতে সেই অঞ্চলের প্রশাসন কার কাছে যাবে। নেতানিয়াহু বলছেন যে গাজাকে কোনও আরব ফোর্সের হাতে তুলে দেওয়া যেতে পারে। তবে, এখন পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে কোন আরব দেশ এই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হবে। এই প্রস্তাবের গুরুত্ব বিবেচনা করে এই বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন বাকি
যদিও নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রস্তাবকে সবুজ সংকেত দিয়েছে, তবে এটিকে এখনও ইজরায়েলের পুরো মন্ত্রিসভার কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হবে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই অনুমোদন রবিবার (১০ই আগস্ট) পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে। ততক্ষণ পর্যন্ত পরিস্থিতি অস্থায়ী বলে বিবেচিত হতে পারে।
দখলের জন্য রণনীতি তৈরি
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইজরায়েল গাজার সেই অঞ্চলগুলিতে সামরিক দখল করতে পারে যেখানে এখনও কোনও শক্তিশালী নিরাপত্তা মোতায়েন নেই। পাশাপাশি, সেখানে বসবাসকারী প্যালেস্তাইনদের আগে থেকেই সতর্ক করা হবে যাতে তারা সময় থাকতে নিরাপদ স্থানে যেতে পারে। এই রণনীতি ভবিষ্যতে কোনও বড় মানবিক সংকট এড়ানোর চেষ্টার অংশ হতে পারে।
গাজায় যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়ল
গাজা ও ইজরায়েলের মধ্যে আগে থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত ২২ মাস ধরে চলা এই লড়াইয়ে উভয়পক্ষের প্রচুর জানমালের ক্ষতি হয়েছে। এখন যদি ইজরায়েল সামরিক দখলের দিকে অগ্রসর হয়, তবে এই সংঘাত আরও গুরুতর হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা
ইজরায়েলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়ার দিকেও নজর থাকবে। গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলের দখল, বিশেষ করে সামরিকভাবে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। কিছু দেশ এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করতে পারে, আবার কিছু দেশ এর সমালোচনাও করতে পারে।