চিকিৎসার অভাবে নবজাতককে বিক্রি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই উদ্ধার করল প্রশাসন

চিকিৎসার অভাবে নবজাতককে বিক্রি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই উদ্ধার করল প্রশাসন

ঝাড়খণ্ডের পালামৌতে চিকিৎসার অভাবে নবজাতককে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর প্রশাসন সক্রিয় হয় এবং শিশুটিকে নিরাপদে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পালামৌ: ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলায় একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। পিঙ্কি দেবী নামে এক মহিলা তার নবজাতক পুত্রকে গুরুতর অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। পিঙ্কি দেবীর স্তনের টিউমারের চিকিৎসার জন্য পরিবারের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না, এবং দৈনন্দিন চাহিদা পূরণেরও কোনও উপায় ছিল না।

পিঙ্কি একজন দালালের মাধ্যমে তার নবজাতককে লাতেহারের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং জনগণ অবিলম্বে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে প্রশাসন তৎপর

এই ঘটনার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর, ঝাড়খণ্ড সরকার এবং প্রশাসন তৎপর হয়। মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বিষয়টি নজরে এনে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জেলা প্রশাসন রবিবার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে নবজাতক শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে। প্রশাসন পিঙ্কি দেবী এবং তার স্বামী রামচন্দ্র রামকেও সহায়তা প্রদান করে এবং পুরো ঘটনার উপর নজর রাখে।

শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে

লেসলিগঞ্জ থানার পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের একটি দল শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে এবং নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তাকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়। পিঙ্কি দেবী এবং তার স্বামী তাদের পাঁচ সন্তান সহ দেবী মণ্ডপের ছাউনির নিচে বসবাস করছেন।

শিশুটিকে ফিরে পেয়ে পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। প্রশাসন পরিবারটিকে রেশন, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে। এই পদক্ষেপে পিঙ্কি দেবী এবং তার পরিবার সংকটের সময়ে স্বস্তি পেয়েছে।

পিঙ্কি দেবীর পরিবার সরকারি সাহায্য ও সুবিধা পেল

পিঙ্কি দেবীর পরিবারের রেশন কার্ড, আধার কার্ড বা জব কার্ডের মতো কোনও নথি ছিল না, যার কারণে তারা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন না। প্রশাসন এখন এই পরিবারকে এই সমস্ত সুবিধা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য করার ব্যবস্থা শুরু করেছে।

জেলাশাসক জানিয়েছেন যে পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজ সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্তনের টিউমারের চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে তাদের এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে না হয়।

Leave a comment