দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নির্মল চৌধুরীর আর্থিক সাহায্য: বিতর্ক ও সমালোচনা

দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নির্মল চৌধুরীর আর্থিক সাহায্য: বিতর্ক ও সমালোচনা

নির্মল চৌধুরী পিপলোদি স্কুল দুর্ঘটনায় মৃত শিশুদের পরিবারকে ₹১ লক্ষ নগদ সাহায্য দিয়েছেন, যার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে কিছুজন একে প্রশংসনীয় পদক্ষেপ বলেছেন, সেখানেই অনেকে এটিকে প্রচার বলেছেন। সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনা হয়েছে যে এটি সংবেদনশীলতা নয়, রাজনীতি। 

Nirmal Chaudhary: রাজস্থানের ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা মূলধারার রাজনীতির দিকে পা বাড়ানো তরুণ নেতা নির্মল চৌধুরী আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। এইবারের কারণ হল ঝালাওয়াড়ের পিপলোদি স্কুল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের নগদ আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সময় তৈরি করা তাঁর একটি ভাইরাল ভিডিও। ভিডিওতে নির্মল চৌধুরীকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ৫০০-৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল দিতে দেখা যাচ্ছে। যদিও এই পদক্ষেপের প্রশংসার পাশাপাশি প্রচার এবং রাজনৈতিক স্টান্টের অভিযোগও দ্রুত উঠতে শুরু করেছে।

পিপলোদি স্কুল দুর্ঘটনায় ৭ শিশুর মৃত্যু, রাজনীতি সরগরম

উল্লেখযোগ্য যে, পিপলোদির সরকারি স্কুলের ছাদ সম্প্রতি ধসে পড়েছিল, যাতে ৭ জন নিরীহ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় সারা রাজ্যে শোকের ঢেউ নেমে এসেছে এবং সরকার থেকে বিরোধী দল পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রনেতা থেকে সমাজকর্মী এবং এখন উদীয়মান রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা নির্মল চৌধুরীও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে পিপলোদি পৌঁছন।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে এক-এক লক্ষ টাকার নগদ সাহায্য

নির্মল চৌধুরী তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে তাঁকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বাড়ি গিয়ে ₹১,০০,০০০-এর সাহায্য দিতে দেখা যাচ্ছে। তিনি এই টাকা ৫০০-৫০০ টাকার নোটের দুটি বান্ডিল আকারে উপহার দিয়েছেন। ভিডিওতে তাঁর সঙ্গে কিছু স্থানীয় সমর্থক ও ক্যামেরা টিমও দেখা গেছে। এই দৃশ্য কিছু মানুষকে আবেগপ্রবণ করে তুললেও কিছু মানুষকে বিরক্ত করেছে।

সমালোচনার ঝড়: 'এটা কি সাহায্য নাকি প্রচারের চিত্রনাট্য?'

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়ার বন্যা বয়ে যায়। যেখানে কিছু লোক তাঁর উদারতার প্রশংসা করেছেন, সেখানে অনেকেই এটিকে 'সংবেদনার বিপণন' বলে অভিহিত করেছেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন: 'যদি সাহায্যই করতে হয়, তাহলে চুপচাপ করুন, এই ক্যামেরা আর ভিডিও শুট কেন? স্কুলটিকে দত্তক নিয়ে স্থায়ী সমাধানের কথা বলুন, বাচ্চাদের মৃত্যুতে প্রচার করাটা জঘন্য।' অন্য একজন মন্তব্য করেছেন: '৫০০ টাকার বান্ডিল দেখিয়ে নেতা হওয়ার চেষ্টা, মানবতা নয়, সুযোগসন্ধানিতার গন্ধ আসছে।'

নির্মলের বক্তব্য: 'এটি কেবল একটি ছোট প্রচেষ্টা'

ভাইরাল ভিডিও নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোর মাঝে নির্মল চৌধুরী তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন: 'এই ছোট সাহায্য তাদের বাকি সন্তানদের আরও ভালো শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ গড়তে সহযোগিতা করবে। ভবিষ্যতে যদি এই পরিবারগুলোর আমার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি সবসময় তাদের পাশে থাকব। তিনি মানুষদের এই অসহায় পরিবারগুলোর সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসার আবেদনও জানিয়েছেন।

নির্মল লিখেছেন, 'এমনকি প্রদেশের ক্ষমতায় বসে থাকা কিছু লোক তাদের মানবতা হারালেও, আমরা সবাই মিলে এই পরিবারগুলোর জীবনে সামান্য স্বস্তি এবং আশার আলো আনতে পারি।'

রাজনীতিতে কি সংবেদনারও বাজার আছে?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা তরুণ নেতারা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিচিতি তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সংবেদনশীল ইস্যুতে দৃশ্যমান হওয়া এবং ভাইরাল হওয়ার চাপ বেড়ে গেছে। একজন বিশ্লেষক বলেছেন: 'আজকের রাজনীতিতে ‘দেখানো’ সবচেয়ে জরুরি হয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিটি দুঃখজনক ঘটনাতেও কি ক্যামেরা সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত? সাহায্য কি গোপন হতে পারে না?'

স্থানীয় মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

পিপলোদির কিছু স্থানীয় মানুষ নির্মলের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। একজন ক্ষতিগ্রস্ত বাবা বলেছেন, 'অন্তত কেউ তো আমাদের দুঃখে শামিল হয়েছে। সরকারের থেকে তো এখনও পর্যন্ত শুধু প্রতিশ্রুতিই মিলেছে।' অন্যদিকে, কিছু গ্রামবাসী এও বলেছেন যে নেতারা যদি স্থায়ী সমাধান যেমন স্কুলের পুনর্নির্মাণ বা স্বাস্থ্য সুবিধার কথা বলতেন, তাহলে আরও ভালো হতো।

Leave a comment