উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের করিডরে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার কিছু অংশ খুবলে খায় রাস্তায় ঘোরাফেরা করা কুকুর। হৃদয়বিদারক এই ঘটনার ছবি ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
মানবিকতার ছেঁকা! করিডরেই শেষ নিঃশ্বাস, রাতের অতিথি হয়েই চিরনিদ্রা
অঙ্কোলজি বিভাগের পাশের করিডরে ওই ব্যক্তি ঘুমিয়ে ছিলেন বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ধারনা করা হচ্ছে, হোটেলের খরচ বহন করতে না পেরে মেডিক্যাল কলেজের করিডরেই রাত্রিযাপন করেন তিনি। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় নিঃশব্দে।
সকালবেলায় দেখা যায় বিভীষিকার ছবি, নিরাপত্তা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের কর্মীরা দেহটির উপর কুকুরের হামলা লক্ষ্য করেন। সঙ্গে সঙ্গেই দেহটি সরিয়ে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এর আগেও এই হাসপাতালেই কুকুরের কাণ্ডে শোরগোল পড়েছে।
পুরনো ক্ষত আবার উন্মোচিত, ২০২২-এও ঘটেছিল এমনই ভয়াবহ ঘটনা
ঠিক দুই বছর আগে, ২০২২ সালের ৩০ মে, এই হাসপাতালেই আহত রোগীর কাটা হাত মুখে করে ঘুরছিল একটি কুকুর। এই ঘটনা নতুন নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন হাসপাতালের রোগী ও কর্মীরা।
সুপার জানালেন সমস্যা পুরনো, কুকুর তাড়াতে বারবার চিঠি, কাজের কাজ কিছু হয়নি
মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল কাম সুপার ডঃ সঞ্জয় মল্লিক জানালেন, দীর্ঘদিন ধরেই ভবঘুরে ও কুকুরের উৎপাত রয়েছে। পশুপালন দপ্তরকে বিষয়টি বারবার জানানোর পরও কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবার বিষয়টি স্বাস্থ্যদপ্তরেও জানানো হবে।
ভবঘুরেদের রাতের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে হাসপাতাল, রোগীর পরিবারও সহযোগী
স্থানীয়দের দাবি, বহু ভবঘুরে প্রতিদিন রাত কাটান হাসপাতালের বিভিন্ন করিডরে। অনেক সময় রোগীর আত্মীয়রা তাঁদের খাবারও দেন। এই মানবিক আচরণ কখনও কখনও বিপদ ডেকে আনছে—ঠিক যেমন ঘটল এই ট্র্যাজেডিতে।
প্রশ্ন উঠছে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়েও
এই ধরনের করুণ ও অমানবিক ঘটনার পিছনে হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাও দায়ী বলে মনে করছেন অনেকে। এত বড় প্রতিষ্ঠানে কুকুর ঢুকছে কীভাবে, ভবঘুরেরা দিনরাত কাটাচ্ছেন কীভাবে—এসব নিয়েও তদন্ত দাবি তুলেছে সমাজের একাংশ।