নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চম্পট বন্দির কাকদ্বীপে পুলিশের নাকের ডগায় নাটকীয় পালানো

নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চম্পট বন্দির কাকদ্বীপে পুলিশের নাকের ডগায় নাটকীয় পালানো

হাসপাতালের গেট থেকে নদীর জলে লাফ, তোলপাড় কাকদ্বীপ, ফের ধরা পড়ল অভিযুক্ত রবিবার সকালে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পৌঁছেছিল পুলিশ। আদালতের নির্দেশে ৩ দিনের হেফাজতে থাকা তিন অভিযুক্তকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল। গেটের সামনে পৌঁছতেই আচমকা এক অভিযুক্ত পুলিশের হাত ছাড়িয়ে দৌড় লাগান, আর তার পরই শুরু হয় এই চাঞ্চল্যকর পালানোর কাহিনি।

পাশেই নদী, সেখানেই লাফ! প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখের সামনে নাটক

কালনাগিনী নদীর পাশ দিয়ে চলতে থাকা এই নাটকে প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে উঠলেন স্থানীয় বাসিন্দা চন্দন জানা। তাঁর কথায়, “হঠাৎ দেখি এক লোক দৌড়ে এসে সোজা নদীতে ঝাঁপ দিল। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন পেছন পেছন ছুটলেন, কিন্তু লোকটা এর মধ্যেই জলে মিলিয়ে গেছে।” নদীতে তখন বর্ষার জলে স্রোত টগবগ করছে।

চুরির অভিযোগে ধৃত, আদালতের নির্দেশে পুলিশ হেফাজত

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সহ আরও দুই জনকে বৃহস্পতিবার রাতে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার তাঁদের আদালতে পেশ করা হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। সেই নির্দেশ মেনেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল ধৃতদের শারীরিক পরীক্ষার জন্য।

কালনাগিনী নদীতে উত্তাল স্রোত, বিপদের মধ্যেই তল্লাশি

পালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা। কাকদ্বীপ থানার পুলিশ ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করতে। সঙ্গে যোগ দেয় হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার বাহিনী ও সিভিক ভলান্টিয়াররাও। নদীর জলে প্রবল স্রোতের মধ্যেই চলে প্রায় দু’ঘণ্টা ব্যাপী তল্লাশি।

শেষমেশ ময়নাপাড়া থেকে ফের গ্রেফতার, কিছুক্ষণের নাটক শেষে অভিযুক্ত পুলিশের জালে

সব মিলিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা বাদে কাকদ্বীপের ময়নাপাড়া এলাকা থেকে ফের গ্রেফতার করা হয় পলাতক যুবককে। পুলিশের তৎপরতায় বড় অঘটন এড়ানো সম্ভব হলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে— এত বড় ফাঁক নিরাপত্তায় কীভাবে ঘটল?

নতুন মামলা দায়ের, তদন্তে নেমেছে হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার পুলিশ

ঘটনার গুরুত্ব বুঝেই এবার পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানায় নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।” তদন্তে নেমেছে পুলিশের স্পেশাল টিম।

পুলিশি হেফাজতে এত বড় ফাঁক! প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

 হাসপাতালে নিরাপত্তা ছিল তো আদৌ? কোথায় গাফিলতি, কে দায়ী— তা খুঁজে বের করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে।

নদীতে ঝাঁপ নয়, পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতায় ধাক্কা

এক অভিযুক্তের নদীতে ঝাঁপিয়ে পালানো শুধু কাকদ্বীপ নয়, গোটা পুলিশ ব্যবস্থার ওপরই প্রশ্নচিহ্ন টানছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে থেকে এমনভাবে পালিয়ে যাওয়া নিছক দুর্ঘটনা নয়— এটা গাফিলতির প্রতিচ্ছবি। যদিও অভিযুক্ত ধরা পড়েছে, তবুও তদন্তে আসল গাফিলতির উৎস না ধরতে পারলে এমন ঘটনা যে আবারও ঘটবে না, তা বলা যায় না।

Leave a comment