পুঞ্চে পাক গোলায় অনাথ ২২ শিশুর দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

পুঞ্চে পাক গোলায় অনাথ ২২ শিশুর দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

পুঞ্চে পাক গোলাগুলিতে অনাথ হওয়া ২২ জন শিশুর দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী। এটিকে জাতীয় বিপর্যয় আখ্যা দিয়ে সরকারের কাছে ठोस পদক্ষেপের দাবি জানালেন তিনি।

রাহুল গান্ধীর সমর্থন: মে মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে পাকিস্তানের ভারী গোলাগুলি অনেক পরিবারের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এই গোলাগুলি এমন এক সময়ে হয় যখন ভারতীয় সেনা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর অধীনে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল পহেলগামে হওয়া জঙ্গি গণহত্যা, যেখানে ২৬ জন নিরীহ নাগরিকের প্রাণ গিয়েছিল, তার প্রতিশোধ নেওয়া।

এই প্রত্যাঘাতের পর পাকিস্তানের দিক থেকে সীমান্ত এলাকায় গুলিবর্ষণ এবং মর্টারের শেলিংয়ের ঘটনা বেড়ে যায়। এই হিংসার কবলে পড়ে অনেক নিরীহ নাগরিকের প্রাণ যায়, যাদের মধ্যে অনেক বাবা-মাও ছিলেন। এই ঘটনার পরে ২২টি শিশু অনাথ হয়ে যায়।

রাহুল গান্ধীর মানবিক দায়িত্ব পালন

লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী পুঞ্চ সফর করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন। তিনি এই ঘটনাকে "একটি বড় মানবিক বিপর্যয়" বলে অভিহিত করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাহুল গান্ধী তাঁদের সমস্যাগুলি বোঝার চেষ্টা করেন এবং তাঁদের আশ্বাস দেন যে তিনি এই বিষয়টি জাতীয় স্তরে তুলবেন। এই আলোচনার সময়েই জানা যায় যে পাকিস্তানি গুলিতে তাঁদের বাবা-মাকে হারানো ২২টি শিশু এখন সহায়সম্বলহীন।

রাহুল গান্ধী এই উপলক্ষে একজন সংবেদনশীল এবং দায়িত্বশীল নেতার ভূমিকা পালন করে ঘোষণা করেন যে তিনি এই ২২টি শিশুর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেবেন। এর মধ্যে শিশুদের শিক্ষা, জীবনযাপন, স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যতের দেখাশোনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি বলেন যে এই শিশুদের দেখাশোনা করা তাঁর ব্যক্তিগত এবং নৈতিক কর্তব্য, যা জাতির জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।

অপারেশন সিন্দুর এবং তার পটভূমি

‘অপারেশন সিন্দুর’ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা ৭ মে শুরু করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল পহেলগামে জঙ্গিদের দ্বারা করা হামলার প্রতিশোধ নেওয়া এবং সীমান্ত পেরিয়ে থাকা জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা। এই সামরিক অভিযানে পাকিস্তান এবং পিওকে-র ভিতরে জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবার মতো সংগঠনের নয়টি ঘাঁটি লক্ষ্য করা হয়েছিল।

এই ঘাঁটিগুলির মধ্যে বাহাওয়ালপুর এবং মুरीদকে-এর মতো এলাকায় থাকা জঙ্গি কমান্ড সেন্টারও অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভারতের এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মতো পদক্ষেপের পর পাকিস্তান পাল্টা আক্রমণ করে নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি)-র কাছে গোলাগুলি বাড়িয়ে দেয়।

সরকারের কাছে বিরোধীদের প্রশ্ন

রাহুল গান্ধী সংসদে এই বিষয়ে সরকারের কাছে সরাসরি প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন যে পুরো দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল, তা সত্ত্বেও অপারেশন সিন্দুর হঠাৎ করে কেন বন্ধ করা হল? তিনি জিজ্ঞাসা করেন যে যদি পাকিস্তান দুর্বল অবস্থানে ছিল এবং হাঁটু মুড়ে বসছিল, তাহলে ভারত কেন এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পিছিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিল। এর পাশাপাশি তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেই বিবৃতির উল্লেখ করেন যেখানে বলা হয়েছিল যে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘটাতে মধ্যস্থতা করেছিলেন। রাহুল গান্ধী এই বিষয়ে সরকারের কাছে স্পষ্টীকরণ চান যে ভারত কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পড়ে অপারেশন বন্ধ করেছে।

Leave a comment