ভারতের ইতিহাসে বহু মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছেন, যাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামে অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং স্বাধীন ভারতের নির্মাণে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু যখন আমরা ভারতের একতা, অখণ্ডতা ও স্থিতিশীলতার কথা বলি, তখন যে নামটি আমাদের মনে সবার আগে আসে, তিনি হলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল। তিনি শুধুমাত্র একজন দক্ষ আইনজীবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন না, বরং একজন প্রকৃত রাষ্ট্রনির্মাতা ছিলেন, যিনি ভারতীয় উপমহাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করে এক ভারতের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
প্রাথমিক জীবন: সরলতা থেকে অসাধারণত্ব
সর্দার প্যাটেল ১৮৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর গুজরাটের নাডিয়াড শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম ছিল বল্লভভাই ঝাভেরভাই প্যাটেল। তিনি লেওয়া প্যাটেল কৃষক পরিবার থেকে এসেছিলেন। শৈশব থেকেই তাঁর মধ্যে আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাসের भावना ছিল। তিনি নাডিয়াড, বোরসদ ও পেটলাডে স্কুলশিক্ষা গ্রহণ করেন এবং যৌবনে নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা করে वকালতির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
প্যাটেলের জীবনের একটি বিশেষ দিক ছিল এই যে, তিনি কোনো কাজকে কঠিন মনে না করে, সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে করতেন। একটি ঘটনা অনুসারে, একবার তিনি নিজের শরীরের ফোড়া बिना কোনো ডর खुद ছুরি দিয়ে ফাটান, जबकि পাশে দাঁড়ানো নরসুন্দর কাঁপছিলেন। এই ঘটনা তাঁর धैर्य এবং আত্মসংযমের পরিচয় দেয়।
আইন থেকে জনসেবার দিকে
বল্লভভাই প্যাটেল একজন সফল আইনজীবী ছিলেন এবং আমেদাবাদে তাঁর वकालতির ব্যবসা খুব ভালো চলছিল। তিনি ইউরোপীয় পোশাক পরতেন এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। কিন্তু যখন মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি দেশসেবার পথ বেছে নিলেন, তখন তিনি নিজের সবকিছু ত্যাগ করলেন — বিদেশি বস্ত্র, জীবনযাত্রা এবং এমনকি নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থও।
খেড়া, বোরসদ ও বারদৌলি: গণআন্দোলনের নেতৃত্ব
সর্দার প্যাটেল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে খেড়া, বোরসদ ও বারদৌলিতে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সফল নেতৃত্ব দেন। ১৯১৮ সালের খেড়া সত্যাগ্রহে তিনি কর না দেওয়া किसानों के समर्थन में आवाज তোলেন। ১৯২৩ সালে বোরসদ আন্দোলন এবং ১৯২৮ সালের বারদৌলি সত্যাগ্রহ তাঁর অসামান্য সাংগঠনিক দক্ষতা ও নেতৃত্ব ক্ষমতার প্রমাণ ছিল। বারদৌলি সত্যাগ্রহের সাফল্যের পর সেখানকার মহিলারা তাঁকে 'সর্দার' উপাধি দেন, যার অর্থ হল – 'নেতা' বা 'মুখ্য'। এই উপাধি आगे चलकर তাঁর পরিচয় হয়ে ওঠে।
কংগ্রেসে নেতৃত্ব ও সংগঠন कौशल
বল্লভভাই প্যাটেল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে অনেক প্রশাসনিক কার্য निर्वाह করেছেন। তিনি বহু বছর ধরে গুজরাট প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির अध्यक्ष ছিলেন এবং ১৯৩১ সালের করাচি অধিবেশনে কংগ্রেস সভাপতি भी নির্বাচিত হন। তাঁর নেতৃত্বে 'মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক নীতি'র প্রস্তাব पारित হয়, যা ভারতীয় সংবিধানের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। তিনি गांधीजी के निकटতম सहयोगियों में से एक ছিলেন এবং বহুবার তাঁর সঙ্গে কারাগারে गए। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে (১৯৪২) তিনি গোয়ালিয়া ট্যাঙ্ক ময়দানে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তা ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে প্রেরণাদায়ক ভাষণগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত হয়।
স্বাধীনতার পর: দেশের একতার রূপকার
ভারত যখন ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা লাভ করে, তখন দেশে ৫৬৫টির বেশি रियासतें ছিল, যাদের ভারত বা পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা ছিল। দেশের একতার এই কঠিন সময়ে সর্দার প্যাটেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও उपप्रधानमंत्री হিসেবে चुनौतीपूर्ण কার্যभार ग्रहण করেন। তিনি रियासतों के शासकों के साथ बातचीत করে, কৌশল অবলম্বন করে এবং কোথাও कहीं কঠোরভাবে কাজ করে, বেশিরভাগ रियासतेंকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করেন। হায়দরাবাদ, জুনাগড় ও কাশ্মীর-এর মতো বিতর্কিত क्षेत्रগুলোকে তিনি ভারতে সংযুক্ত করেন। এই কাজের জন্য তাঁকে "ভারতের বিসমার্ক" ও "লৌহ মানব" বলা হয়।
প্রশাসনিক दक्षता ও अखिल भारतीय सेवाएं
সর্দার প্যাটেল মনে করতেন, একটি শক্তিশালী প্রশাসনিক ढांचाই কোনো राष्ट्रকে সফল করতে পারে। তিনি आईएएस (Indian Administrative Service) ও आईपीएस (Indian Police Service)-এর মতো अखिल भारतीय सेवाओं की स्थापना করেন, যা আজও ভারতের प्रशासनिक ढांचा की रीढ़ है। তাঁকে 'ভারতীয় সিভিল सेवकों के संरक्षक संत'ও বলা হয়।
নেহেরু ও প্যাটেল: ভিন্ন চিন্তা, समान लक्ष्य
যদিও সর্দার প্যাটেল ও পণ্ডিত जवाहरलाल नेहरू-এর মধ্যে कई बार মতপার্থক্য দেখা গেছে, বিশেষ করে সমাজবাদ ও বিদেশ নীতির বিষয়গুলোতে, তবুও তাঁরা উভয়েই ভারতের স্বাধীনতা ও একতার জন্য समर्पित ছিলেন। গান্ধীজির মৃত্যুর পর সর্দার প্যাটেল নেহেরুকে প্রধানমন্ত্রী बनाए রাখার জন্য সম্পূর্ণ सहयोग দেন और स्वयं पीछे हट जाते हैं।
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
১৯৫০ সালের ১৫ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে সর্দার প্যাটেলের निधन हो गया। তাঁর প্রস্থানে ভারত এমন এক নেতাকে হারায়, যাঁর দৃঢ়তা, স্পষ্টতা ও দেশপ্রেমের সঙ্গে অন্য কারও তুলনা চলে না। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে ৩১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে "স্ট্যাচু অফ ইউনিটি"-র উদ্বোধন করা হয়, যা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি (১৮২ মিটার)। এই মূর্তি ভারতের সেই নেতাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি, যিনি খণ্ড-খণ্ড ভারতকে এক সূত্রে বেঁধেছিলেন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করতে যে অবদান রেখেছেন, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি কেবল একজন नेता ছিলেন না, বরং একটি ধারণা ছিলেন – একতার, সংকল্পের এবং সেবার। আজ যখন हम "এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত"-এর কথা বলি, তখন এটি সর্দার প্যাটেলের দূরদৃষ্টিরই ফল।
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ভারতীয় एकता, অখণ্ডতা ও রাষ্ট্র নির্মাণের सच्चे প্রতীক ছিলেন। তাঁর দূরদর্শিতা, দৃঢ়তা ও প্রশাসনিক कुशलता ভারতকে একটি राष्ट्र के रूप में स्थापित করেছে। লৌহ মানব হিসেবে তাঁর উত্তরাধিকার हमेशा देश को प्रेरणा দেয়।