শারদীয় নবরাত্রি ২০২৫ এই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত পালিত হবে। ব্রত ভঙ্গ নবমী বা দশমীতে করা যেতে পারে। নবমীতে কুমারী পূজা এবং যজ্ঞের পর ব্রত ভঙ্গ করা যেতে পারে, তবে যারা পুরো নয় দিন উপবাস রাখেন, তাদের জন্য দশমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ করা শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। ব্রত ভঙ্গের সময় সাত্ত্বিক খাবার এবং কুমারী পূজা অপরিহার্য।
নবরাত্রি ব্রত ভঙ্গ ২০২৫: শারদীয় নবরাত্রি এই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত সারা ভারতে পালিত হবে। এই নয় দিনের উৎসবে মা দুর্গার নয়টি রূপের পূজা, উপবাস এবং যজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত। ভক্তরা প্রায়শই জানতে চান যে ব্রত নবমীতে ভাঙা উচিত নাকি দশমীতে। ধর্মীয় বিশ্বাস এবং পঞ্জিকা অনুসারে, নবমীতে কুমারী পূজা এবং যজ্ঞের পর ব্রত ভঙ্গ করা যেতে পারে, তবে যারা পুরো নয় দিন উপবাস রাখেন, তাদের জন্য দশমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ করা সবচেয়ে শুভ এবং শাস্ত্রসম্মত বলে মনে করা হয়।
শারদীয় নবরাত্রি ২০২৫ এর প্রধান তিথিগুলি
- নবমী তিথি: ৩০ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ০৬:০৬ থেকে ০১ অক্টোবর, বুধবার রাত ০৭:০১ পর্যন্ত
- মহানবমী পূজা: ০১ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার
- দশমী তিথি: ০১ অক্টোবর, বুধবার রাত ০৭:০১ থেকে ০২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ০৭:১০ পর্যন্ত
- বিজয়া দশমী/দশেরা: ০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
নবরাত্রির সময় ভক্তরা মা দুর্গার নয়টি রূপের বিধিপূর্বক পূজা করেন। নয় দিনের ব্রত প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত রাখা হয়। এরপর ব্রত ভঙ্গ করা আবশ্যক, যাতে ব্রত সফল ও ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়।
নবমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ
যে ভক্তরা নবমী তিথিতে কুমারী পূজা এবং যজ্ঞ করেন, তারা যজ্ঞের পর ব্রত ভঙ্গ করতে পারেন। উত্তর ভারতে এই প্রথা খুব প্রচলিত।
মহানবমী পূজা এবং যজ্ঞ
০১ অক্টোবর, বুধবার সকাল ০৬:২০ থেকে ১১:৪০ পর্যন্ত নবমী যজ্ঞের শুভ মুহূর্ত থাকবে। এই সময়ের মধ্যে কুমারী পূজা এবং যজ্ঞ করার পর ব্রত ভঙ্গ করা যেতে পারে।
নবমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গকারীদের জন্য এটি শুভ বলে মনে করা হয় কারণ এই দিনে মা দুর্গার নবম রূপের পূজা সম্পন্ন হয়। ব্রত ভঙ্গের আগে কুমারীদের ভোজন করানো এবং দক্ষিণা দেওয়া ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দশমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ
ধর্মীয় গ্রন্থ এবং জ্যোতিষীয় গণনা অনুসারে, প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত ব্রত রাখা শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে নবমী তিথি শেষ হওয়ার পর দশমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ করা সর্বোত্তম।
দশমী তিথির শুভ মুহূর্ত
০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার সকাল ০৬:১৫ এর পর ব্রত ভঙ্গ করা যেতে পারে।
যে ভক্তরা পুরো নয় দিন ব্রত রাখেন, তাদের জন্য দশমী তিথিতে ব্রত ভঙ্গ করা সবচেয়ে উপকারী। এই সময়ে মায়ের আশীর্বাদ বিশেষ ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
ব্রত ভঙ্গের নিয়ম ও ঐতিহ্য
- পূজা এবং যজ্ঞ: ব্রত ভাঙার আগে দেবীর পূজা, আরতি এবং যজ্ঞ করা উচিত। যদি নবমীতে ব্রত ভঙ্গ করেন তবে অবশ্যই যজ্ঞ করুন।
- কুমারী পূজা: ব্রত ভঙ্গের আগে নয়জন কুমারী এবং একজন বালককে ভোজন করান এবং তাদের আশীর্বাদ নিন। তাদের দক্ষিণা বা উপহার দিন।
- শুদ্ধ খাবার: ব্রত ভঙ্গের জন্য সর্বদা সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ করুন। রসুন, পেঁয়াজ, আমিষ বা তামসিক খাবার পরিহার করুন।
- ব্রত ভঙ্গের সামগ্রী: ঐতিহ্যগতভাবে ক্ষীর, লুচি, হালুয়া এবং সাত্ত্বিক ফলহার সেবন করা হয়।
- কলস বিসর্জন: যদি আপনি ঘটস্থাপন করে থাকেন তবে দশমী তিথিতে শুভ মুহূর্তে কলস বিসর্জন করুন।
নবমী বনাম দশমী: কোনটি বেছে নেবেন?
- নবমী ব্রত ভঙ্গ: যদি আপনার পরিবারে নবমীতে কুমারী পূজার পর ব্রত ভাঙার প্রথা থাকে তবে ০১ অক্টোবর ব্রত ভঙ্গ করা ঠিক।
- দশমী ব্রত ভঙ্গ: যারা পুরো নয় দিন ব্রত রাখেন, তাদের জন্য ০২ অক্টোবর সূর্যোদয়ের পর ব্রত ভঙ্গ করা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, সঠিক তিথি ও বিধি মেনে ব্রত ভঙ্গ করলে মা দুর্গার আশীর্বাদ আরও কার্যকর হয়। ব্রত ভঙ্গের সময় কুমারী পূজা করলে ব্রত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়।
ব্রত ভঙ্গের গুরুত্ব
ব্রত ভঙ্গ করা ততটাই জরুরি যতটা ব্রত রাখা। নয় দিনের উপবাস মা দুর্গার নয়টি রূপের পূজা, সংযম এবং ভক্তির প্রতীক। ব্রত ভঙ্গের সময় সাত্ত্বিক খাবার গ্রহণ করা এবং কুমারীদের ভোজন করানো ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
- এটি মা দুর্গার আশীর্বাদ নিশ্চিত করে।
- ব্রত ভঙ্গের সময় কুমারী পূজা করলে ব্রতের প্রভাব আরও বেড়ে যায়।
- ধর্মীয় গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে সঠিক মুহূর্তে ব্রত ভঙ্গ করলে জীবনে সমৃদ্ধি এবং সুখ-শান্তি আসে।
শারদীয় নবরাত্রি নির্দেশিকা
- শুরু: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার থেকে ব্রত শুরু।
- নবমী: ৩০ সেপ্টেম্বর-০১ অক্টোবর ২০২৫, কুমারী পূজার পর ব্রত ভঙ্গ সম্ভব।
- দশমী/বিজয়া দশমী: ০২ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, পুরো নয় দিনের ব্রত ভঙ্গ করা সর্বোত্তম।
- খাবার: সাত্ত্বিক খাবার যেমন ক্ষীর, হালুয়া, লুচি।
- ঐতিহ্য: কুমারী পূজা, কলস বিসর্জন এবং পূজা অপরিহার্য।
ভক্তদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে তারা তাদের ঐতিহ্যবাহী বিশ্বাস এবং পরিবারের রীতি-নীতি অনুসরণ করুন। যদি নবমীতে ব্রত ভঙ্গের প্রথা থাকে, তবে ০১ অক্টোবর করুন; অন্যথায় দশমীতে ব্রত ভঙ্গ করা সর্বোত্তম হবে।