প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্মদিনে শত্রুঘ্ন সিনহা-র আবেগঘন পোস্ট। ২০১৪-র মতবিরোধের পর বন্ধুত্বের চর্চা, ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিহার নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক জল্পনাও তুঙ্গে।
PM Modi Birthday: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর ৭৫তম জন্মদিন পালন করছেন। এই উপলক্ষে বিজেপি সারা দেশে 'সেবা পক্ষ' পালন করছে, যেখানে দলের কর্মীরা সমাজসেবা এবং জনসম্পর্ক বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্মদিনে সারা দেশে শুভেচ্ছার বন্যা বয়ে চলেছে। নেতা, অভিনেতা এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শত্রুঘ্ন সিনহার আবেগঘন পোস্ট
একদা প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া শত্রুঘ্ন সিনহাও এই উপলক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি শেয়ার করে সিনহা লিখেছেন, "একবারের বন্ধু, চিরকালের বন্ধু।" এই পোস্টের পর রাজনৈতিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
সিনহা এবং মোদীর মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে দূরত্ব ছিল। ২০১৪ সালে শত্রুঘ্ন সিনহার কড়া মন্তব্যের জেরে তাঁদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে। এতদসত্ত্বেও আজ সিনহা আবেগঘনভাবে মোদীকে স্মরণ করেছেন, যা অনেকেই তাঁর রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন বা সম্ভাব্য নৈকট্যের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
বন্ধুত্বে ফাটল কখন ধরে
শত্রুঘ্ন সিনহা এবং নরেন্দ্র মোদী পূর্বে একই রাজনৈতিক শিবিরের বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী ঠিক করার সময় তাঁদের মধ্যে মতপার্থক্য সামনে আসে। সেই সময় বিজেপি-র অন্দরে আদবানি এবং মোদীর সমর্থকরা ভিন্ন মত পোষণ করতেন।
সিনহা, নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে বহুবার আদবানীর সাথে মিলে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মোদীর নির্বাচন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল যে আদবানীর সমর্থন ছাড়া নরেন্দ্র মোদী এগোতে পারবেন না। এই মতপার্থক্যই দুই নেতার মধ্যে দূরত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
২০০৯ সালে বিজেপির জন্য সিনহা পাটনা সাহেব থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জয়লাভ করেন। এরপর ২০১৪ সালে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। এর ফলেও দুই নেতার মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের পর আলোচনা
সম্প্রতি সিনহার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সিনহা ২০২৫ সালের বিহার নির্বাচনের আগে বিজেপির সঙ্গে নৈকট্য বাড়াচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা চলছে যে শত্রুঘ্ন সিনহা তাঁর পুরনো রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত বন্ধুত্বকে পুনরায় দৃঢ় করার চেষ্টা করছেন।
এই পোস্টের পর বিজেপি কর্মী ও সমর্থকরা এটিকে একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে, বিরোধীরা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এটিকে সিনহার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন এবং রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছেন।
বিহার নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক ইঙ্গিত
শত্রুঘ্ন সিনহা ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে বিজেপির টিকিটে পাটনা সাহেব থেকে সাংসদ ছিলেন। এরপর ২০২৪ সালে তিনি টিএমসি-র টিকিটে আসানসোল থেকে নির্বাচন লড়েন এবং জয়লাভ করেন। তাঁর এখন মোদীকে স্মরণ করার পেছনে বেশ কিছু রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।