টোটোর দাপটে হাঁসফাঁস সিউড়ি পৌরসভা নিল দৃঢ় সিদ্ধান্ত

টোটোর দাপটে হাঁসফাঁস সিউড়ি পৌরসভা নিল দৃঢ় সিদ্ধান্ত
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

বীরভূমের সিউড়ি শহর এক সময় পরিচিত ছিল তার শান্ত পরিবেশ আর গুছানো রাস্তাঘাটের জন্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টোটোর সংখ্যা, আর সেই সঙ্গেই দখল নিয়েছে যানজট। বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সমস্যার মূলে পৌঁছনো যায়নি এতদিন। এবার সেই চেনা চিত্র বদলাতে কড়া পদক্ষেপ নিল পৌরসভা।অবশেষে জনজীবনের অসুবিধা বুঝে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আশার আলো দেখছেন শহরবাসী।

১৫ জুলাই থেকে কার্যকর ‘জোড়-বিজোড়’ নিয়ম, সকাল-বিকেল ভাগ করে চলবে টোটো

যদিও ১৪ জুলাই থেকেই নতুন নিয়ম চালুর ঘোষণা হয়েছিল, বাস্তবে তা চালু হয় ১৫ জুলাই থেকে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো এবং দুপুর ২টো থেকে রাত ১০টা—এই দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে টোটো চলাচলের সময়। এক ভাগে চলবে জোড় নম্বর, আর অন্য ভাগে বিজোড়।যানজট নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পনাটি আধুনিক শহর পরিচালনার মতোই স্ট্র্যাটেজিক, শহরের গতি ফেরানোর প্রয়াস এটি।

জোড় দিনে জোড়, বিজোড় দিনে বিজোড়—সিউড়িতে গাড়ি চলবে পালা করে

নিয়ম বলছে, যদি সকালে চলে জোড় সংখ্যার টোটো, তবে বিকেলে চলবে বিজোড় নম্বরের। এবং উল্টোটা। অর্থাৎ একই দিনে সব টোটো রাস্তায় নামতে পারবে না। শহরের রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা অর্ধেক হওয়ায় মিলবে যানজট থেকে রেহাই—এটাই প্রশাসনের যুক্তি।রাজধানীর জোড়-বিজোড় গাড়ি নীতির অনুকরণে এবার সিউড়িতে ‘টোটো সংস্কার’!

রঙিন নম্বর প্লেটে ‘চিহ্নিত’ টোটো, নিয়ম ভাঙলেই জরিমানা

প্রতিটি টোটোতে লাগানো হয়েছে আলাদা রঙের নম্বর প্লেট—জোড় ও বিজোড় চিহ্ন বোঝাতে। শহরের অলিতে-গলিতে নজরদারি চালাচ্ছেন পৌরপিতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, থানার আইসি সঞ্চয়ন ব্যানার্জী সহ আধিকারিকেরা। এদিন নিয়ম ভাঙায় ৮টি টোটো আটকও করা হয়েছে।শহরের রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ কড়াকড়ির এই চেহারা নতুন, যাত্রীদের মুখে ফিরছে হাসি।

নিয়ম ভাঙলে ১০০ টাকার জরিমানা, টোটোচালকদের ‘লাল চোখে’ দেখছে প্রশাসন

পৌরপিতা স্পষ্ট জানিয়েছেন—যাঁরা নিয়ম মানবেন না, তাঁদের প্রতিদিন ১০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। শুধু জরিমানা নয়, ভবিষ্যতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি।বহুদিন পর টোটোচালকদের জন্য এল স্পষ্ট বার্তা—‘শৃঙ্খলা না মানলে রাস্তায় থাকার অধিকার নেই।’

যানজট থেকে নিস্তার চান সিউড়িবাসী, আশার আলো প্রশাসনের উদ্যোগে

সিউড়ির রাস্তায় দখলদারি, যত্রতত্র পার্কিং, আর অসংখ্য টোটো বহুদিন ধরেই শহরের দুঃস্বপ্ন। এবার পৌরসভার নিয়ম দেখে অনেকেই বলছেন—“যদি নিয়মটা বজায় থাকে, শহর ফের স্বাভাবিক হবে।শহরের ফুসফুস যেন আবার শ্বাস নিতে পারছে, পুরনো শহর ফিরে আসার ইঙ্গিত।

তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—নিয়ম থাকবে কতদিন?

উদ্যোগ ভাল, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতীতে বহু নিয়ম ঘোষণা হয়েছিল, বাস্তবে তা মুছে গিয়েছে কালের গর্ভে। এবারও কি তেমনই হবে? না কি এইবার সত্যিই শহর বদলাবে? আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতের হাতে।প্রশাসনের সদিচ্ছা স্পষ্ট, কিন্তু কার্যকারিতার বাস্তবতা পরীক্ষায় দাঁড়াতে হবে এই নীতিকে।

Leave a comment