বালেশ্বরের ছাত্রী সৌম্যশ্রী-র আত্মহত্যার পরে, কংগ্রেস এবং আরও ছ'টি দল ১৭ই জুলাই ওড়িশা বনধের ডাক দিয়েছে। নেতারা এটিকে হত্যা বলে মনে করছেন এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছেন।
ওড়িশা: ফকির মোহন স্বায়ত্তশাসিত মহাবিদ্যালয়, বালেশ্বরের ছাত্রী সৌম্যশ্রী-র আত্মদাহের ঘটনায় গোটা রাজ্য জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার পরে, কংগ্রেস এবং বামপন্থী দলগুলি মিলিতভাবে ১৭ই জুলাই, ২০২৫-এ ওড়িশা বনধের ডাক দিয়েছে। একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনের সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিরোধী দলগুলির দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত হত্যা, যা সরকার এবং প্রশাসন উপেক্ষা করছে।
সাতটি দল একসাথে প্রতিবাদ করবে
কংগ্রেস সভাপতি ভক্ত চরণ দাস জানিয়েছেন, এই বনধে মোট সাতটি রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। তিনি জনসাধারণের প্রতি আবেদন করেছেন, তাঁরা যেন এই বনধ সফল করেন এবং রাজ্যে মহিলাদের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচারের দাবিকে শক্তিশালী করেন। ভক্ত চরণ দাস অভিযোগ করেছেন যে সৌম্যশ্রী-কে হত্যা করা হয়েছে এবং সরকার এই ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সম্পূর্ণ ঘটনাটি কী?
সৌম্যশ্রী সম্প্রতি আত্মদাহ করেছেন। গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনাটি বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজের। জানা যাচ্ছে, সৌম্যশ্রী দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক ও সামাজিক চাপে ছিলেন এবং প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতা তাঁকে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।
শান্তিপূর্ণ বনধের প্রস্তুতি
কংগ্রেস এবং বামপন্থী দলগুলি ঘোষণা করেছে যে এই বনধ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে। স্কুল, কলেজ, বাজার, দোকান, যানবাহন ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। এই বনধের উদ্দেশ্য কেবল প্রতিবাদ জানানো নয়, বরং একটি ইতিবাচক এবং ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থার দাবি জানানো।
মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের প্রতিক্রিয়া
ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজু জনতা দল (বিজেডি)-র সভাপতি নবীন পট্টনায়ক সৌম্যশ্রী-র মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইট করে বলেছেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে একজন তরুণীকে ন্যায়বিচারের জন্য আকুতি জানাতে গিয়ে জীবন দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, এটি কেবল একটি ঘটনা নয়, বরং ব্যবস্থার ব্যর্থতার প্রমাণ।
রাজ্যজুড়ে মোমবাতি মিছিল ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
সৌম্যশ্রী-র আত্মার শান্তি কামনায় রাজ্যজুড়ে মোমবাতি মিছিল বের করা হয়েছে। কংগ্রেস, বামপন্থী দল এবং এনসিপি-র কর্মীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। মোমবাতি মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল জনসাধারণের দৃষ্টি এই সংবেদনশীল ইস্যুর দিকে আকর্ষণ করা এবং তরুণদের মধ্যে ন্যায়বিচারের আশা জাগিয়ে রাখা।
বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আক্রমণ
বিরোধী দলগুলি বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ চালিয়েছে। তাঁরা বলেছে, ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি সরকার কারও কথা শুনছে না এবং জন भावनाओंাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছে। তাঁরা নৈতিকতার ভিত্তিতে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে।
ওড়িশা বনধে অংশগ্রহণের আবেদন
ভক্ত চরণ দাস এবং অন্যান্য নেতারা রাজ্যের জনগণ, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে এই বনধে অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, এটি কেবল একজন ছাত্রীর বিষয় নয়, বরং রাজ্যের প্রতিটি মেয়ের সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত একটি প্রশ্ন।