গাড়োদা গ্রামের ছাত্রীর ভাইরাল ভিডিও: 'নেতাজী, বিকাশ কোথায়?'

গাড়োদা গ্রামের ছাত্রীর ভাইরাল ভিডিও: 'নেতাজী, বিকাশ কোথায়?'

গাড়োদা গ্রামের ছাত্রী শিবানী হাঁটু পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে নেতাদের ব্যঙ্গাত্মকভাবে প্রশ্ন করে - 'নেতাজী, বিকাশ কোথায়?' যা গ্রামের দুর্দশা তুলে ধরেছে।

Rajasthan: সিকার জেলার লক্ষ্মণগড় অঞ্চলের গাড়োদা গ্রাম আজকাল দেশজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। কারণ হল গ্রামের একজন সচেতন ছাত্রী শিবানী, যে বৃষ্টির জলে প্লাবিত গ্রামের অবস্থা নিয়ে ব্যঙ্গ করে এমন একটি ভিডিও তৈরি করেছে যা ভাইরাল হয়েছে। কয়েক সেকেন্ডের এই ক্লিপটি কেবল প্রশাসনের ঘুমই কাড়েনি, বরং ক্ষমতাসীন নেতাদেরও সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য করেছে।

জলে দাঁড়িয়ে শিবানীর প্রশ্ন - নেতাজী, বিকাশ কোথায়?

গারোদার স্কুল ছাত্রী শিবানী তার মোবাইল ক্যামেরায় একটি ভিডিও রেকর্ড করেছে, যেখানে সে স্কুলের পোশাকে হাঁটু পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে আছে। সে ব্যঙ্গাত্মকভাবে জিজ্ঞাসা করে, 'নেতাজী, বিকাশ কোথায়?' তার এই একটি বাক্য আজ সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে আলোচিত কণ্ঠে পরিণত হয়েছে। এই প্রশ্নটি শুধু একজন ছাত্রীর ক্ষোভ নয়, বরং পুরো গ্রামের অবস্থার প্রতিচ্ছবি, যা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করা হয়েছে।

বিকাশের দাবি, কিন্তু বাস্তবে কাদাজল

শিবানী তার ভিডিওতে বলেছে যে, সামান্য বৃষ্টিতেই গ্রামের রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়। গ্রামের বিদ্যুতের ডি.পি. (DP) জলে ডুবে আছে, যা থেকে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গ্রামের জেনারেটরও খারাপ অবস্থায় রয়েছে এবং বিদ্যুতের সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। গ্রামবাসীকে বাধ্য হয়ে গবাদি পশুর রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এই সমস্ত সমস্যা শিবানী কোনো ভয় ছাড়াই তুলে ধরেছে এবং তার সহজ ভাষায় এমন প্রশ্ন করেছে যা সরাসরি মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে গেছে।

বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করেছে

এই ঘটনার পর বিরোধী দলগুলি কংগ্রেস সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে যে, 'বিকাশ' কি কেবল পোস্টার এবং বক্তৃতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? তারা বলেছে যে, যদি একজন ছাত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার কথা বলতে হয়, তবে এটি স্পষ্ট করে যে জনগণের আওয়াজ প্রশাসনের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

ডোটাসরা শিবানীর সাথে দেখা করেছেন

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, কংগ্রেস প্রদেশের সভাপতি এবং লক্ষ্মণগড়ের বিধায়ক গোবিন্দ সিং ডোটাসরা শিবানীকে তার বাসভবনে ডেকে পাঠান। তিনি শিবানীর সাহস এবং সচেতনতার প্রশংসা করেন। ডোটাসরা আরও বলেন যে, গ্রামের সমস্যাগুলির সমাধান অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করা হবে। যদিও, অনেকে এটিকে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে নেতার ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শিবানীকে সমর্থন

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথেই লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শিবানীর ভূয়সী প্রশংসা করছে। টুইটার থেকে ইনস্টাগ্রাম পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ শিবানীকে 'নির্ভীক গ্রাম্য প্রতিবেদক' এবং 'জনতার কণ্ঠস্বর' হিসেবে অভিহিত করেছে। কিছু ব্যবহারকারী বলেছেন যে, এখন নেতাদের মাঠে নামতেই হবে, কারণ ডিজিটাল যুগে ক্যামেরা মিথ্যা বলে না।

মেয়েটির কণ্ঠ পরিবর্তন-এর স্ফুলিঙ্গ তৈরি করেছে

শিবানী প্রমাণ করেছে যে, পরিবর্তনের সূচনা কোনো বড় মঞ্চ থেকে নয়, বরং গ্রামের গলি থেকেও হতে পারে। এখন গ্রামের অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরাও সচেতন হচ্ছে এবং প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন করতে শুরু করেছে। গাড়োদা গ্রামে শিবানীর কারণে পরিবর্তনের আশা বেড়েছে। গ্রামের মহিলারা বলছেন যে, এখন তাদের মেয়েরা চুপ করে থাকবে না এবং প্রয়োজন হলে তারাও প্রশাসনের কাছে জবাব চাইবে।

Leave a comment