সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রত্যাবর্তন: সিএবি সভাপতি পদে আবারও মহারাজ?

সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রত্যাবর্তন: সিএবি সভাপতি পদে আবারও মহারাজ?

ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বিসিসিআই-এর প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী আবারও ক্রিকেট প্রশাসনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে চলেছেন। এই বার তিনি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-এর সভাপতি পদের দায়িত্ব নিতে পারেন।

স্পোর্টস নিউজ: ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম প্রভাবশালী অধিনায়ক এবং বিসিসিআই-এর প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী আবারও ক্রিকেট প্রশাসনে ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (সিএবি)-এর সভাপতি পদের জন্য আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এই পদটি তিনি এর আগেও ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সফলভাবে সামলেছেন।

ছয় বছর পর সিএবি-তে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি

সৌরভ গাঙ্গুলী ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি ২০২৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)-এর আগে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। এই পদক্ষেপ তাঁর প্রশাসনিক যাত্রাকে পুনরায় শুরু করার প্রতীক হবে, বিশেষত যখন সিএবি-র বর্তমান সভাপতিত্ব তাঁর বড় ভাই স্নেহাশিস গাঙ্গুলীর হাতে রয়েছে।

সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রত্যাবর্তন এই কারণেও সম্ভব হয়েছে, কারণ তাঁর ভাই স্নেহাশিস গাঙ্গুলী, যিনি বর্তমানে সিএবি-র সভাপতি, তিনি লোধা কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত কার্যকালের সীমাবদ্ধতার কারণে পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অযোগ্য হয়ে গেছেন। এর ফলে সভাপতি পদের জন্য সৌরভ গাঙ্গুলীর পথ প্রায় পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং যদি কোনো উল্লেখযোগ্য প্রার্থী না আসেন, তবে তাঁর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রায় নিশ্চিত।

নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু

সিএবি সভাপতি পদের নির্বাচন নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি একটি জরুরি অ্যাপেক্স কাউন্সিল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এখন ১৪ অগাস্টে চূড়ান্ত কাউন্সিল মিটিং হওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। এর পর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া এবং অন্যান্য নির্বাচনী নিয়মকানুন সম্পন্ন করা হবে।

সৌরভ গাঙ্গুলীর পূর্বের কার্যকাল

সৌরভ গাঙ্গুলীর পূর্বের সিএবি সভাপতি হিসেবে কার্যকাল (২০১৫-২০১৯) বাংলা ক্রিকেটের জন্য একটি ইতিবাচক যুগ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই সময় তিনি:

  • বাংলা ক্রিকেটের পরিকাঠামো উন্নত করেছেন।
  • কোচিংয়ের সুবিধা আরও ভালো করেছেন।
  • প্লেয়ার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে বিনিয়োগ করেছেন।
  • ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দলকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছেন।
  • তাঁর নীতি এবং দৃষ্টিভঙ্গি বাংলা রঞ্জি দলকে প্রতিযোগিতায় একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী করে তুলেছে।

বিসিসিআই সভাপতি থাকাকালীনও নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা দেখিয়েছেন

সৌরভ গাঙ্গুলীর ক্রিকেট প্রশাসনের অভিজ্ঞতা শুধুমাত্র রাজ্য স্তরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি হিসেবে কার্যভার সামলেছেন এবং এই সময় তিনি অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন:

  • বেঙ্গালুরুতে অত্যাধুনিক ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি (এনসিএ) শুরু করেছেন।
  • মহিলা ক্রিকেটকে উৎসাহিত করতে উইমেন'স টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জের আয়োজন করেছেন।
  • পরে এই উদ্যোগ উইমেন'স প্রিমিয়ার লিগের (ডব্লিউপিএল) ভিত্তি স্থাপন করে।
  • ২০২৩-২০২৭ সালের জন্য আইপিএল মিডিয়া রাইটসের রেকর্ড ডিল ৪৮,০০০ কোটি টাকার বেশি টাকায় নির্ধারণ করেছেন।

এই সমস্ত কৃতিত্ব সৌরভ গাঙ্গুলীকে একজন দূরদর্শী ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

বাংলা ক্রিকেট কি নতুন দিশা পাবে?

সৌরভ গাঙ্গুলীর সিএবি-তে পুনরায় ফিরে আসা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমী এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গেছে। তাঁর কৌশলগত চিন্তা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা এবং গ্রাউন্ড-লেভেল ক্রিকেটকে বোঝার গভীরতা বাংলা ক্রিকেটকে নতুন দিশা এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করতে পারে। সিএবি-র এক वरिष्ठ আধিকারিকের মতে, গাঙ্গুলীর নেতৃত্ব বাংলা ক্রিকেটের জন্য উপকারী হবে। তিনি মাঠের বাস্তবতা বোঝেন এবং খেলোয়াড়দের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেন।

Leave a comment