মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা ভারতে শুরু হতে চলেছে ইলন মাস্কের Starlink ইন্টারনেট পরিষেবা জানুন কী থাকছে অফারে

মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা ভারতে শুরু হতে চলেছে ইলন মাস্কের Starlink ইন্টারনেট পরিষেবা জানুন কী থাকছে অফারে

ভারতেও আসছে মহাকাশ-নির্ভর ইন্টারনেট Starlink, পরিষ্কার হচ্ছে পরিষেবার রূপরেখা

আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা! খুব তাড়াতাড়িই ভারতের মাটিতে পা রাখতে চলেছে এলন মাস্কের কোম্পানি SpaceX-এর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা— Starlink। Press Trust of India (PTI)-র সূত্র জানাচ্ছে, প্রতি মাসে আনলিমিটেড হাই-স্পিড ডেটা ব্যবহার করতে খরচ পড়বে গড়ে ₹৩,০০০। যদিও প্রথম পর্যায়ে সবার নাগালে এই পরিষেবা থাকছে না। শুধুমাত্র বেছে নেওয়া কিছু ব্যবহারকারীই পাবেন এর সুযোগ।

প্রথম পর্যায়ে সুবিধা পেতে চলেছেন মাত্র ২০ লক্ষ গ্রাহক!

Starlink-এর লক্ষ্য মূলত দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া। যেখানে প্রচলিত ব্রডব্যান্ড পৌঁছায় না, সেখানেই এই পরিষেবা হয়ে উঠবে ডিজিটাল লাইফলাইন। ২০ লক্ষ ব্যবহারকারী এই প্রাথমিক পরিষেবার আওতায় আসবেন। গতি থাকবে ২৫ এমবিপিএস থেকে শুরু করে ২২০ এমবিপিএস পর্যন্ত— যা গ্রামীণ ভারতের জন্য যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সিলমোহর: ভারত সরকার দিয়েছে সবুজ সংকেত

টেলিকম প্রতিমন্ত্রী পেম্মাসানি চন্দ্র শেখর জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতে পরিষেবা শুরু করার সবুজ সংকেত পেয়েছে Starlink। এটি Low Earth Orbit (LEO) স্যাটেলাইট ব্যবহার করে কাজ করবে। এই পরিষেবা Jio, Airtel-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না গিয়ে বরং সহযোগী পরিষেবা হিসেবেই কাজ করবে— বিশেষত শহরের বাইরে যেখানে পরিকাঠামো দুর্বল।

কবে থেকে চালু হবে পরিষেবা? প্রি-অর্ডার শুরু হবে কবে?

Starlink-এর তরফে এখনও পরিষেবার নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করা হয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে ২০২৫ সালের শেষের দিকেই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে ভারতে। তার আগেই চালু হতে পারে প্রি-অর্ডার উইন্ডো। যারা আগেভাগে বুকিং করবেন, তারাই প্রাথমিক ভাবে সংযোগ পাবেন বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

সাবস্ক্রিপশন ও হার্ডওয়্যারের খরচ কত?

পরিষেবাটি নিতে গেলে মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি ₹৩,০০০-₹৪,২০০ এর মধ্যে হতে পারে। সেই সঙ্গে একবারের জন্য কিনতে হবে একটি হার্ডওয়্যার কিট, যার আনুমানিক মূল্য হবে প্রায় ₹৩৩,০০০। যদিও এই খরচ এলাকা ও ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

কী কী আসবে Starlink প্যাকেজে?

Starlink-এর সংযোগ নিতে হলে ব্যবহারকারীদের একটি সেটেলাইট ডিশ এবং WiFi রাউটার লাগবে— যা হার্ডওয়্যার কিটে থাকবে। ভারতীয় টেলিকম সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে, যেমন Jio ও Airtel-এর সঙ্গে পার্টনারশিপে ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে এই পরিষেবা বিতরণ করা হবে।

আসছে নতুন প্রযুক্তি, স্পিড বাড়াতে নজর পরবর্তী প্রজন্মের স্যাটেলাইটে

২০২৬ সাল থেকে Starlink শুরু করতে চলেছে নতুন প্রজন্মের স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ, যেগুলির প্রতিটির ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০০০ Gbps পর্যন্ত। এর ফলে ইন্টারনেট স্পিড ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং কম সংযুক্ত এলাকায় পরিষেবা আরও উন্নত হতে পারে।

মূলধারার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং গ্রামীণ ভারতের নির্ভরযোগ্য সমাধান

যদিও হার্ডওয়্যারের খরচ ও সাবস্ক্রিপশন চার্জ তুলনায় বেশি, তবুও শহরের বাইরে, বিশেষত পাহাড়ি ও জঙ্গলে ঘেরা গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে আর কোনও বিকল্প নেই, সেখানেই Starlink সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। এটি মূলধারার ISP-দের জন্য ততটা চ্যালেঞ্জ নয়, বরং ঘাটতির জায়গা পূরণ করাই মূল লক্ষ্য।

লক্ষ্য: প্রত্যন্ত অঞ্চলকে সংযুক্ত করাই মূল উদ্দেশ্য

Starlink-এর প্রধান উদ্দেশ্য হল, দেশের সেই সমস্ত জায়গায় ইন্টারনেট পৌঁছানো— যেখানে এখনও কোনও পরিকাঠামো তৈরি হয়নি বা হওয়াও অসম্ভব। পাহাড়, দ্বীপ বা অরণ্যাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের কাছে সংযুক্তির নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে এই পরিষেবা।

ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মঞ্চে Starlink-এর গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

Starlink শুধু ইন্টারনেট নয়— এটি হতে চলেছে ডিজিটাল শিক্ষা, টেলিমেডিসিন, ই-ব্যাঙ্কিং, সরকারি পরিষেবার রিয়েল টাইম অ্যাক্সেস-এর হাতিয়ার। হিমালয় থেকে শুরু করে সুন্দরবন পর্যন্ত যেখানে ইন্টারনেট ছিল সোনার হরিণ, এখন তা বাস্তব হয়ে উঠতে চলেছে।

কেন জরুরি Starlink? BharatNet থাকলেও কেন পূর্ণতা আসেনি

সরকারি প্রকল্প BharatNet দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচল এবং আন্দামানের মতো অঞ্চলে এখনও ইন্টারনেট পৌঁছায়নি। সেখানে টাওয়ার বা ফাইবার বসানো কঠিন কাজ। এই শূন্যস্থান পূরণে Starlink হয়ে উঠতে পারে একমাত্র কার্যকর সমাধান।

Leave a comment