গুগল সিইও সুন্দর পিচাই কর্মীদের কাছে এআইকে দ্রুত গ্রহণ করার, কম সম্পদে বেশি কাজ করার এবং খরচ কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন।
Sunder Pichai: গুগলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) নিয়ে বড় কৌশলগত তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। কোম্পানির সিইও সুন্দর পিচাই সম্প্রতি একটি অল-হ্যান্ডস মিটিং-এর সময় কর্মীদের একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন – 'এআইকে গ্রহণ করুন, নিজের কার্যক্ষমতা বাড়ান এবং কম সম্পদে বেশি অর্জন করুন।' গুগল এখন এই অভিমুখে কেবল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন নয়, অভ্যন্তরীণ কার্যসংস্কৃতিতে পরিবর্তনের দিকেও এগোচ্ছে।
এআই থেকে কাজের সংজ্ঞা বদলাবে
পিচাইয়ের মনে করেন যে গতিতে এআই বিকশিত হচ্ছে, সেই গতিতে কর্মীদের এটিকে নিজেদের রোজকার কাজে শামিল করা উচিত। তিনি জোর দিয়েছেন যে গুগলকে যদি বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে আগে থাকতে হয়, তাহলে কর্মীদের আরও স্মার্ট এবং এফিশিয়েন্ট উপায়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেছেন, 'এআই-এর উদ্দেশ্য কেবল ভবিষ্যতের প্রযুক্তি হওয়া নয়, বরং এটা আজকের কাজকে সরল, দ্রুত এবং আরও ভালো করার মাধ্যম। আমাদের এর সুবিধা নেওয়া উচিত।'
খরচ কমানোর উপরও জোর
গুগলের বিজনেস মডেলেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। পিচাই স্পষ্ট করেছেন যে আগামী সময়ে গুগল ‘কমে বেশি’র রণনীতি গ্রহণ করবে। কোম্পানি ভারী বিনিয়োগের পরিকল্পনা তো করছেই, কিন্তু এর সাথে নিজেদের খরচগুলিকে কার্যকরী উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করার দিকে পদক্ষেপ বাড়াচ্ছে। 'বড় বিনিয়োগের সাথে আমাদের আরও বেশি অনুशासित হতে হবে। আমাদের এমন সমাধান এবং প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে যা সম্পদের সর্বাধিক ব্যবহার করতে পারে,' পিচাই বলেছেন।
এআই ট্রেনিং প্রোগ্রাম-এর শুরু
গুগলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান সালুজ্জো এই বৈঠকে একটি নতুন উদ্যোগের ঘোষণা করেছেন – 'Building with Gemini'। এটি একটি বিশেষ ট্রেনিং প্রোগ্রাম যা DeepMind-এর সাহায্যে তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য হল গুগলের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের উন্নত এআই টুলসের ব্যবহারে দক্ষ করে তোলা। সালুজ্জো বলেছেন, 'আমরা চাই যে প্রত্যেক কর্মী এআইকে কেবল ব্যবহারই না করুক, বরং একে নিজের কার্যপ্রবাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বানাক।'
এআই টুল Cider-এর প্রশংসা
গুগল দ্বারা বিকশিত এআই কোডিং টুল Cider ইঞ্জিনিয়ারিং কমিউনিটির থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। মে মাসে লঞ্চ হওয়া এই টুলের ৫০% ইউজার প্রতি সপ্তাহে এটি ব্যবহার করছেন। এই টুল কোড জেনারেশন, বাগ ফিক্সিং এবং অপটিমাইজেশন-এর মতো কাজে ইঞ্জিনিয়ারদের সাহায্য করে। Cider-কে ভবিষ্যতের ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্কফ্লো-র একটি স্থায়ী অংশ মনে করা হচ্ছে। গুগলের মনে করে যে এই ধরণের টুল কর্মীদের সৃজনশীলতাকে বাড়াবে এবং রুটিন কাজের বোঝা কমাবে।
গুগলের ভিতরে বদলাতে থাকা মানসিকতা
মিটিং থেকে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে গুগল এখন কেবল একটি টেক কোম্পানি থাকতে চায় না, বরং সে একটি এআই-ড্রাইভেন প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পিচাইয়ের নেতৃত্ব কর্মীদের থেকে দ্রুত, সঠিক এবং দক্ষ ফলাফলের আশা করছে, যেখানে এআই একটি সহকারী নয়, বরং কো-ওয়ার্কারের ভূমিকা পালন করবে।
টেক ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি উদাহরণ
গুগলের এই রণনীতি কেবল কোম্পানির ভিতরে একটি নতুন অধ্যায় লিখবে না, বরং টেক ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি উদাহরণও হতে পারে। जिस तरह से পিচাই এবং তাঁর টিম এআইকে কার্য সংস্কৃতিতে একীভূত করছেন, তা অন্যান্য কোম্পানিকেও উৎসাহিত করতে পারে যে তারা প্রযুক্তিকে কেবল এক্সপেরিমেন্ট নয়, বরং কার্যক্ষমতার প্রধান হাতিয়ার বানাক।