সুপ্ৰিম কোর্ট অধ্যাপক আলি খান মহমুদাবাদকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মামলা বহির্ভূত বিষয় নিয়ে লেখার অনুমতি দিয়েছে। আদালত তদন্ত সংস্থাকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কড়া নির্দেশও দিয়েছে।
নয়াদিল্লি। সুপ্রিম কোর্ট অশোকা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলি খান মহমুদাবাদকে বড় স্বস্তি দিয়েছে। আদালত তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে মামলা বহির্ভূত বিষয় নিয়ে লেখার এবং পোস্ট করার অনুমতি দিয়েছে। একইসঙ্গে তদন্ত সংস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালত বলেছে, তদন্ত নিরপেক্ষ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট পুলিশি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জয়েমাল্য বাগচীর বেঞ্চ শুনানির সময় কঠোর মন্তব্য করে বলেছে, তদন্ত সংস্থা কেন নিজেকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। আদালত দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছে, যে কোনও তদন্তের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সত্যের সন্ধান করা, কোনও পূর্বধারণা থেকে প্রভাবিত হয়ে কাজ করা নয়।
আদালত স্পষ্ট করেছে যে তদন্ত সংস্থাকে সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে থেকে নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। আদালত অধ্যাপক আলি খান মহমুদাবাদকে সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে লেখার স্বাধীনতা দিয়েছে, তবে এই শর্ত দিয়েছে যে তিনি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও মন্তব্য বা বিষয়বস্তু শেয়ার করতে পারবেন না।
'অপারেশন সিঁদুর' পোস্ট নিয়ে গ্রেপ্তার
অধ্যাপক আলি খান মহমুদাবাদকে ১৮ মে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের কারণে হরিয়ানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এই পোস্টটি कथितভাবে “অপারেশন সিঁদুর” এর সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল।
এই গ্রেপ্তারি নিয়ে সারাদেশে বিতর্ক শুরু হয়েছিল এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে ২১ মে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়, তবে তদন্ত প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অস্বীকার করে।
এসআইটি গঠনের নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্ট মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার জন্য হরিয়ানার পুলিশ মহাপরিচালককে একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। আদালত এও স্পষ্ট করেছে যে এই দলে হরিয়ানা এবং দিল্লির কোনও পুলিশ অফিসারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। দলে কমপক্ষে একজন মহিলা অফিসারের নিয়োগও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আদালতের এই নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনগণের উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা করছে। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে যে দলে সিনিয়র আইপিএস অফিসার থাকতে হবে, যাঁরা অভিজ্ঞতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
এবার অন্যান্য বিষয় নিয়ে লিখতে পারবেন অধ্যাপক
আগে সুপ্রিম কোর্ট আলি খান মহমুদাবাদকে এই শর্তে জামিন দিয়েছিল যে তিনি মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও বিবৃতি প্রকাশ্যে দেবেন না এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকবেন। এখন আদালত এই নিষেধাজ্ঞায় স্বস্তি দিয়ে তাঁকে অন্যান্য বিষয় নিয়ে লিখতে, মতামত ভাগ করে নিতে এবং পাবলিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিতে অনুমতি দিয়েছে।
বর্তমানে এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন এবং আগামী শুনানিতে এটি স্থির হবে যে তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়। এও দেখা হবে যে অধ্যাপক আলি খান মহমুদাবাদের বিরুদ্ধে কোনও উপযুক্ত প্রমাণ আসে কিনা।