বরৌনী জংশনের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত গুমটি সংখ্যা-7 বি-তে আরওবি (রোড ওভার ব্রিজ)-এর নির্মাণের টেন্ডার চূড়ান্ত হতেই এলাকার মানুষের মধ্যে খুশির ঢেউ লেগেছে। প্রায় তিন লক্ষ জনসংখ্যার এই অঞ্চলের মানুষের জন্য এই খবরটি কোনও বড় উপহারের চেয়ে কম নয়।
Barauni Junction ROB Construction: বরৌনী জংশনের (Barauni Junction) মানুষের জন্য একটি বড় সুখবর। বহু বছর আগের একটি দাবি অবশেষে পূরণ হতে চলেছে। বরৌনী জংশনের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত গুমটি সংখ্যা-7B এবং 61 স্পেশালে আরওবি (রেল ওভার ব্রিজ)-এর নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এর নির্মাণ থেকে আশেপাশের প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ বড় ধরনের স্বস্তি পাবে।
৫০ বছর পুরোনো দাবি এবার পূরণ হবে
এই আরওবি-র দাবি নতুন নয়, বরং গত ৫০ বছর ধরে স্থানীয় মানুষ এই ইস্যুতে সংগ্রাম করে আসছিলেন। কখনো ধরনা, কখনো অনশন, আবার কখনো ভোট বয়কটের মতো আন্দোলনের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। অবশেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং নাগরিকদের লাগাতার প্রচেষ্টার পর এই স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। বরৌনী এবং আশেপাশের মানুষজন এখন যানজট এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
এই স্থানগুলোতে তৈরি হবে আরওবি এবং এত খরচ হবে
- গুমটি সংখ্যা-7B-তে তৈরি হতে যাওয়া আরওবি-র মোট দৈর্ঘ্য হবে ৩৩২ মিটার।
- এর নির্মাণে ১২৬৫০.৬৩ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ প্রায় ১২৬ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
- এই আরওবি-র কাজ ৩০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
- গুমটি সংখ্যা-৬১ স্পেশালে তৈরি হতে যাওয়া দ্বিতীয় আরওবি-র দৈর্ঘ্য হবে ২২৬ মিটার।
- এর নির্মাণে ৫৭17.24 লক্ষ টাকা, অর্থাৎ প্রায় ৫৭ কোটি টাকা খরচ হবে।
- এটি ২৪ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
মানুষজন খুশি প্রকাশ করেছে, মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে
বরৌনীর মানুষের মধ্যে এই খবর শুনে দারুণ উৎসাহ দেখা দিয়েছে। লাইফলাইন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার বরৌনীর পরিচালক ড. হেমন্ত কুমার লাড্ডু বিতরণ করে তাঁর আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিহার সরকারের মুখ্য সচিব ড. এস. সিদ্ধার্থ এবং অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যাদের সহযোগিতায় এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে পেরেছে।
এই পুলের নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং স্থানীয় সাংসদ গিরিরাজ সিং, প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ ড. রাকেশ সিনহা, তেঘড়ার প্রাক্তন বিধায়ক লল্লন কুঁয়ার, বর্তমান বিধায়ক রামরতন সিং, বিজেপি নেতা কেশব শান্ডিল্য, প্রাক্তন মুখিয়া বিনয় কুমার সিং, ড. হেমন্ত কুমার সহ বহু স্থানীয় নেতা এবং সমাজকর্মীরা বহু বছর ধরে চেষ্টা করেছেন। এই সকলের লাগাতার চাপ এবং প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ আজ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
মানুষজন কোন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে?
বরৌনীর এই অঞ্চল থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রেলওয়ে গেটের দু’পাশে আসা-যাওয়া করে। গুমটি প্রায়শই বন্ধ থাকার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট এবং দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হতো। স্কুল, কলেজ, অফিস, হাসপাতালগামী মানুষের জন্য এই গুমটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু আরওবি তৈরি হয়ে গেলে এই সমস্যা সম্পূর্ণভাবে দূর হয়ে যাবে।
বরৌনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলে ক্রমাগত বাড়তে থাকা যান চলাচল বিবেচনা করে এই আরওবি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। রেলওয়ে গেটে বারবার থামতে হওয়ায় শুধু সময়ের অপচয় হতো না, বরং অনেক সময় জরুরি পরিষেবাগুলিকেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো। আরওবি তৈরি হওয়ার ফলে এখন মানুষজন সহজে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে।