বন্যা ও ভূমিধস: সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র, এনডিএমএ ও রাজ্যগুলিকে নোটিশ, অবৈধ গাছ কাটাক মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ

বন্যা ও ভূমিধস: সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র, এনডিএমএ ও রাজ্যগুলিকে নোটিশ, অবৈধ গাছ কাটাক মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ

বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকার, এনডিএমএ ও রাজ্যগুলিকে নোটিশ জারি করেছে। আদালত অবৈধ গাছ কাটাকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশোধনীমূলক পদক্ষেপের উপর একটি প্রতিবেদন চেয়েছে।

নয়াদিল্লি: দেশের বিভিন্ন অংশে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুতর অবস্থান নিয়েছে। আদালত দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশ সহ ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আদালত বলেছে যে এই ধরনের দুর্যোগগুলি কেবল প্রাকৃতিক কারণে হচ্ছে না, বরং মানুষের হস্তক্ষেপ এবং বিশেষ করে অবৈধ গাছ কাটাও এর জন্য দায়ী। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকার, এনডিএমএ (National Disaster Management Authority) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে নোটিশ জারি করে জবাব চেয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই বিষয়ে অবগত হয়েছে

সাম্প্রতিক দুর্যোগগুলির বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে বন্যা ও ভূমিধসের কারণে মানুষের জীবন ও সম্পত্তির উপর বিশাল বিপদ নেমে এসেছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে বড় ধরনের ক্ষতি রোধ করার জন্য সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। আদালত এই বিষয়ে শুনানির জন্য দুই সপ্তাহ পরে তারিখ নির্ধারণ করেছে এবং সলিসিটর জেনারেলকে সরকারের পক্ষ থেকে সংশোধনীমূলক ব্যবস্থার তথ্য জমা দিতে বলেছে।

কোন রাজ্যগুলির উপর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে

সুপ্রিম কোর্ট তার আদেশে সেই রাজ্যগুলির উল্লেখ করেছে যেখানে সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনাগুলি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশ। এছাড়াও, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে পাহাড়ি অঞ্চলে গাছ কাটার অবৈধতা এবং অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজের ফলে দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বেড়েছে। আদালত বলেছে যে এই রাজ্যগুলিতে প্রাকৃতিক ভারসাম্যের বিঘ্ন ঘটার কারণেই বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনাগুলি ক্রমাগত ঘটছে।

অবৈধ গাছ কাটাকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে

সুপ্রিম কোর্ট কঠোরভাবে বলেছে যে হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং জম্মু ও কাশ্মীরে বিপুল পরিমাণে অবৈধ গাছ কাটা দুর্যোগের মূল কারণ। আদালত আরও বলেছে যে পরিবেশকে উপেক্ষা করে করা উন্নয়নমূলক কাজগুলি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। যখন নির্বিচারে গাছ কাটা হয়, তখন মাটির বাঁধন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বৃষ্টির সময় পাহাড় ধসে পড়তে থাকে। এর ফলে কেবল ভূমিধসই হয় না, নদীর প্রবাহও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে, যার ফলে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

কেন্দ্র সরকার ও সংস্থাগুলিকে নোটিশ

আদালত এই বিষয়ে কেন্দ্র সরকার এবং এনডিএমএ সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে নোটিশ জারি করে জানতে চেয়েছে যে এই দিকে এখন পর্যন্ত কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে যে ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটি সুসংহত পরিকল্পনা তৈরি করা উচিত। এতে বন সংরক্ষণ, নদী ব্যবস্থাপনা এবং পাহাড়ি অঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করার মতো ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে।

দুই সপ্তাহ পর শুনানি হবে

সুপ্রিম কোর্ট আপাতত এই বিষয়ে চূড়ান্ত মন্তব্য করেনি। আদালত বলেছে যে দুই সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত শুনানিতে কেন্দ্র সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করতে হবে। এই প্রতিবেদনে দুর্যোগ প্রতিরোধের বর্তমান ব্যবস্থাগুলির পাশাপাশি ভবিষ্যতের কৌশলও উল্লেখ করতে হবে।

Leave a comment