ইস্তাম্বুলে ঐতিহাসিক শান্তি আলোচনা: পাকিস্তান-আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত

ইস্তাম্বুলে ঐতিহাসিক শান্তি আলোচনা: পাকিস্তান-আফগানিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত
সর্বশেষ আপডেট: 6 ঘণ্টা আগে

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে এই মাসে ঘটে যাওয়া সহিংস সংঘর্ষের পর উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। তবে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার পর পরিস্থিতি উন্নতির আশা জেগেছে।

World News: পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা ও সামরিক সংঘর্ষের পর অবশেষে শান্তির এক নতুন আশা জেগেছে। তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক আলোচনার পর উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে (Ceasefire) সম্মতি জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে যখন গত কয়েক সপ্তাহে উভয় দেশের সীমান্তে গুরুতর সহিংসতা ও বিমান হামলা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছিল।

উত্তেজনার মধ্যে তুরস্কে নিষ্পত্তিমূলক আলোচনা

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ২৫ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুষ্ঠিত এই বহু প্রতীক্ষিত শান্তি আলোচনায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান উভয় দেশেরই জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তুরস্ক ও কাতার এই বৈঠকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে যে, উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং একটি পর্যবেক্ষণ ও যাচাইকরণ ব্যবস্থা (Monitoring & Verification Mechanism) প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে, যা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবে।

এই চুক্তি শুধুমাত্র আঞ্চলিক শান্তির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়ায় স্থিতিশীলতার দিকে একটি নিষ্পত্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর ২০২৫-এ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমান্তে বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়েছিল। ২০২১ সালে তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এটি উভয় দেশের মধ্যে অন্যতম গুরুতর সংঘাত হিসেবে ধরা হয়েছিল।

পাকিস্তান আফগান সীমান্তের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছিল। আফগান বাহিনী পাল্টা গুলি চালিয়েছিল। উভয় দেশ তাদের প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছিল, যার ফলে হাজার হাজার ট্রাক পণ্য ও শরণার্থীদের নিয়ে আটকা পড়েছিল। তবে, গত কয়েকদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রয়েছে এবং কোনো নতুন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ও শাস্তির বিধান

তুরস্ক জানিয়েছে যে, উভয় দেশ শুধুমাত্র যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি, বরং এটিও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষকে শাস্তি দেওয়া হবে। একটি স্বাধীন পরিদর্শন কমিটি গঠন করা হবে যা সীমান্ত এলাকাগুলি পর্যবেক্ষণ করবে। এই কমিটি আগামী সপ্তাহগুলিতে এর কাঠামো ও ক্ষমতা নির্ধারণ করবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, এই ব্যবস্থার বাস্তবায়ন নিয়ে আরও আলোচনার জন্য ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে একটি ফলো-আপ বৈঠক (Follow-up Meeting) অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a comment