চেন্নাইয়ের সুদর্শন এন্টারপ্রাইজ তিরুমালার শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে একটি भव्य ও মূল্যবান অর্ঘ্য নিবেদন করেছে। কোম্পানিটি প্রায় ২.৫ কেজি ওজনের একটি স্বর্ণ শঙ্খ (শঙ্খু) এবং স্বর্ণ চক্র মন্দিরকে দান করেছে, যার মোট মূল্য প্রায় ২.৪ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।
অন্ধ্র প্রদেশ: বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং মর্যাদাপূর্ণ হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির, যা সাধারণত তিরুপতি বালাজি মন্দির নামে পরিচিত, আবারও ভক্তদের ভক্তি ও സമর্পণের সাক্ষী হল। চেন্নাইয়ের সুদর্শন এন্টারপ্রাইজ এই পবিত্র স্থানে ২.৫ কেজি ওজনের একটি স্বর্ণ শঙ্খ এবং চক্র অর্পণ করেছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২.৪ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।
রঙ্গনায়েকুলা মণ্ডপমে দান অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার সকালে তিরুমালা মন্দিরের রঙ্গনায়েকুলা মণ্ডপমে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে সুদর্শন এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধিরা এই মূল্যবান অর্ঘ্য তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (TTD)-এর অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক সি. এইচ. ভেঙ্কাইয়া চৌধুরীর হাতে তুলে দেন। এই দান কেবল ভক্তির অনুভূতিকেই প্রকাশ করে না, বরং মন্দিরের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে আরও একটি সোনালী অধ্যায় যোগ করে।
তিরুমালা মন্দির কেন বিশেষ?
তিরুমালা মন্দির, অন্ধ্র প্রদেশের তিরুপতি জেলায় অবস্থিত এবং এটি ভেঙ্কটাдри নামক পাহাড়ের উপরে নির্মিত, যা আদিশেষের সাতটি মাথার মধ্যে একটির প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়। মন্দিরটি ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের প্রতি উৎসর্গীকৃত, যাঁকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার মনে করা হয়। এই মন্দির কেবল আধ্যাত্মিকভাবেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এর ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও অপরিসীম।
তিরুমালা মন্দিরের উৎপত্তি প্রায় ৩০০ খ্রিস্টাব্দে বলে মনে করা হয়, যা এটিকে ভারতের প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম করে তুলেছে। পল্লব, চোল এবং বিজয়নগর সাম্রাজ্যের মতো দক্ষিণ ভারতের শক্তিশালী রাজবংশগুলি এই মন্দির নির্মাণ ও সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বিশেষ করে বিজয়নগরের সম্রাট কৃষ্ণদেবরায় মন্দিরটিকে হীরা ও সোনা দিয়ে সজ্জিত করতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। মন্দিরের গর্ভগৃহের (আনন্দ নিলয়ম) ছাদটিকে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্বও তাঁর।
লক্ষ লক্ষ ভক্তের কেন্দ্র
প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত তিরুমালাতে আসেন। এখানে ভক্তরা তাঁদের मनोकामना পূর্ণ হওয়ার আশায় ভগবান ভেঙ্কটেশ্বরের দর্শন করেন এবং আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। ভক্তরা এখানে চুল দান করেন, নগদ অর্থ দান করেন, অথবা সোনা-রূপার মতো মূল্যবান জিনিস দান করার ঐতিহ্য পালন করেন। ১৯৩৩ সালে তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (TTD) ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা আজ মন্দির প্রশাসন, দান ব্যবস্থাপনা এবং তীর্থযাত্রীদের সুবিধার পরিচালনা করে। TTD-এর দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে এই মন্দির শুধুমাত্র ভারতেই নয়, বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় প্রশাসনের একটি আদর্শ মডেল হয়ে উঠেছে।
তিরুমালা মন্দির আজ একটি ধর্মীয় স্থান থেকে আরও বেশি কিছুতে পরিণত হয়েছে। এটি বিশ্বজুড়ে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাসের কেন্দ্র। ডিজিটাল যুগেও মন্দিরের জনপ্রিয়তা কমেনি—অনলাইন দান, ই-প্রসাদ সেবা এবং লাইভ দর্শনের মতো সুবিধাগুলি এটিকে প্রযুক্তির সাথেও সংযুক্ত রেখেছে।