আমেরিকার ট্যারিফের চাপে বিপাকে জুয়েলারি ব্যবসা
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্তে আমেরিকায় ভারতীয় গয়নার দাম আকাশছোঁয়া হওয়ার আশঙ্কা। ৫০ শতাংশ শুল্কের বোঝা পড়ায় রপ্তানি খাতে নেমেছে অশান্তি। প্রতিবছর প্রায় ১০০০ কোটি ডলারের ব্যবসা করে আসা ভারতীয় জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি শিল্প হঠাৎ করেই বড় ধাক্কার মুখে। যুক্তরাষ্ট্র এতদিন ছিল ভারতের অন্যতম বড় ক্রেতা, কিন্তু শুল্ক বাড়ায় বিক্রি হ্রাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববাজারে অসম ট্যারিফ হার, ভারতের জন্য চড়া বোঝা
ট্রাম্প ট্যারিফের হার সব দেশের জন্য সমান নয়। অনেক দেশের পণ্যে শুল্ক তুলনামূলক কম, কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে সেটি দ্বিগুণেরও বেশি। বুধবার অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ যোগ হওয়ায় ভারতীয় পণ্যের শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এই অতিরিক্ত খরচ সরাসরি ক্রেতার উপর চাপবে, ফলে মার্কিন বাজারে ভারতীয় গয়নার চাহিদা কমে যেতে পারে।
বাজার বাঁচাতে রিরুটিংয়ের পথে ভারতীয় সংস্থা
এই পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি সংস্থা ‘রিরুটিং’ কৌশল নেওয়ার পথে হাঁটছে। অর্থাৎ, ভারতের বাইরে অন্য দেশে গয়না তৈরি করে সেখান থেকে আমেরিকায় রপ্তানি করার পরিকল্পনা। এতে সরাসরি ভারতের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক এড়ানো সম্ভব হবে। এই পদক্ষেপকে ইন্ডাস্ট্রির রক্ষাকবচ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পশ্চিম এশিয়ায় উৎপাদন কেন্দ্র গড়ার ভাবনা
রিরুটিংয়ের প্রথম গন্তব্য হিসেবে টার্গেট করা হচ্ছে পশ্চিম এশিয়াকে। বিশেষত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে আমেরিকায় পণ্য পাঠালে শুল্ক মাত্র ১০ শতাংশ। আবার মেক্সিকো থেকে পাঠালে শুল্ক দাঁড়াবে ২৫ শতাংশ। ফলে এই দেশগুলোতে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো।
আইন মেনে রপ্তানির আশ্বাস শিল্প মহলের
জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কৃতি বনসালীর বক্তব্য, সাম্প্রতিক ট্যারিফ স্ট্রাকচার দেখে বিদেশে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া হয়েছে। দুবাইকে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করা হচ্ছে, তবে মেক্সিকোও তালিকায় রয়েছে। বনসালী স্পষ্ট করেছেন, সমস্ত কিছুই আইনি পদ্ধতি মেনে হবে এবং লক্ষ্য থাকবে মার্কিন বাজারে ভারতীয় গয়নার উপস্থিতি টিকিয়ে রাখা।শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ সফল হলে ভারতীয় গয়না রপ্তানি আবারও স্থিতিশীল হতে পারে। তবে উৎপাদন কেন্দ্র সরানো মানে অতিরিক্ত খরচ, যা ছোট সংস্থাগুলোর পক্ষে সামলানো কঠিন হতে পারে। ফলে বড় এবং মধ্যম মাপের কোম্পানিই এই পথে এগোবে বলে ধারণা।