রাশিয়ায় ভূমিকম্প, জাপানে সুনামির তাণ্ডব! হোক্কাইডোতে মহিলার মৃত্যু, আতঙ্ক ছড়াল উপকূলে

রাশিয়ায় ভূমিকম্প, জাপানে সুনামির তাণ্ডব! হোক্কাইডোতে মহিলার মৃত্যু, আতঙ্ক ছড়াল উপকূলে

রাশিয়ার ভূমিকম্পের পর কেঁপে উঠল জাপান, হোক্কাইডো উপকূলে সুনামির ধাক্কা

রাশিয়ার উপকূলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পরই তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে জাপানের দিকে। বিশেষ করে হোক্কাইডো দ্বীপের উপকূল এলাকায় প্রবলভাবে আছড়ে পড়ে সুনামির ঢেউ। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় রুখে দিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল, তবুও একাধিক জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে।

হোক্কাইডোতে সুনামির শিকার এক নারী, মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা

জাপানের হোক্কাইডো অঞ্চলে সুনামির জেরে কমপক্ষে এক মহিলার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি জলের তোড়ে ভেসে যেতে দেখা গিয়েছিল। পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তল্লাশি অভিযান চলছে এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও হতাহতের খবর সামনে আসতে পারে।

অ্যালার্ট জারি করা হয় জাপানের উপকূলে, বন্ধ ট্রেন ও বিদ্যুৎ সংযোগ

জাপানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জরুরি সতর্কতা জারি করে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিকে সতর্ক থাকতে বলে। বেশ কিছু জায়গায় রেল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয় স্কুল-কলেজও। বিদ্যুৎ সরবরাহেও প্রভাব পড়ে হোক্কাইডোর কিছু অংশে। প্রশাসন দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং নিচু এলাকায় থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

সুনামির ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ১.২ মিটার, তবে বড় বিপর্যয়ের থেকে রক্ষা পেয়েছে জাপান

সুনামির ধাক্কা খুব বড় না হলেও, ১.২ মিটার উচ্চতায় জল উঠে আসে হোক্কাইডোর উপকূলে, যা বেশ কিছু নীচু এলাকাকে প্লাবিত করে। তবে ভূমিকম্পের উৎসস্থল রাশিয়ার উপকূলে হওয়ায় জাপান মারাত্মক বিপদের হাত থেকে রেহাই পেয়েছে বলে জানাচ্ছেন ভূবিজ্ঞানীরা। তবুও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভূমিকম্পের আফটার শক বা পুনরায় ঢেউয়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রশাসনের তৎপরতায় রক্ষা পেয়েছে বহু প্রাণ, চলছে টহল ও ত্রাণ কার্যক্রম

জাপানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী, পুলিশ ও কোস্ট গার্ড প্রথম থেকেই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। সুনামির পর মুহূর্তের মধ্যেই তারা উপকূল এলাকায় মোতায়েন হয় এবং লোকজনকে সরিয়ে নেয় নিরাপদ আশ্রয়ে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সতর্কতা প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চলছে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা।

রাশিয়া-জাপান সংযোগস্থলে প্লেট সংঘর্ষেই কম্পনের সৃষ্টি, জানালেন ভূতত্ত্ববিদরা

ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার উপকূলবর্তী এলাকায় শক্তিশালী টেকটনিক প্লেটগুলির সংঘর্ষেই এই কম্পনের সূত্রপাত। যার ফলশ্রুতিতে জাপানের দিকে ছড়িয়ে পড়ে কম্পনের ঢেউ। বিশেষত হোক্কাইডো দ্বীপটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় পড়ায় সেখানেই প্রথম ধাক্কা লাগে সুনামির। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো পরবর্তী আফটারশক ও সম্ভাব্য সুনামির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে ব্যস্ত।

প্রকৃতির সামনে অসহায়তা, কিন্তু প্রস্তুত জাপান

জাপান বারংবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়, কিন্তু তাদের প্রস্তুতি এবং প্রতিক্রিয়া সবসময় বিশ্বে উদাহরণ হয়ে থাকে। এবারও হোক্কাইডোতে সুনামির ধাক্কা সত্ত্বেও বড় রকমের প্রাণহানি এড়ানো গেছে প্রশাসনের তৎপরতায়। যদিও এক নারীর মৃত্যু এই বিপর্যয়কে ম্লান করে দিয়েছে, তবে এখন প্রধান লক্ষ্য হলো আফটারশক বা পরবর্তী ঢেউয়ের সম্ভাবনার দিকে নজর রাখা এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

Leave a comment