দেশজুড়ে ৮৯ বিশ্ববিদ্যালয়কে একযোগে নোটিশ, তালিকায় রাজ্যেরও ৮ প্রতিষ্ঠান
ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশন (UGC) সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল। দেশের ৮৯টি বিশ্ববিদ্যালয়কে একযোগে পাঠানো হল শোকজ নোটিশ, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৮টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। ইউজিসি-র অভিযোগ, এই প্রতিষ্ঠানগুলির কর্তৃপক্ষ বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও ‘অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি’ গঠন সংক্রান্ত নির্দেশিকা মানেনি। এমনকি ছাত্রছাত্রীদের মতামত নিয়েও কোনো সদর্থক উদ্যোগ দেখা যায়নি।শুধু অমান্য নয়, কর্তৃপক্ষের 'অনাগ্রহ' নিয়ে ক্ষুব্ধ ইউজিসি |
রাজ্যের ৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘিরে বিতর্ক, প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক দায়িত্বে
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে, সেগুলি হল — আইআইটি খড়গপুর, শিবপুরের আইআইইএসটি, বরানগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট (ISI), পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বারাসাতের স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়, আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং বোলপুরের বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকা দেখে শিক্ষামহল স্তম্ভিত। দেশের মানচিত্রে সম্মানজনক অবস্থানে থাকা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠতে পারে, অনেকের কল্পনার বাইরে।
অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি মানা বাধ্যতামূলক, না মানলে বন্ধ হবে অনুদান!
UGC স্পষ্ট জানিয়েছে—নোটিশে উল্লেখিত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে, আগামী দিনে অনুদান বন্ধ করা হতে পারে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কেন্দ্রীয় অনুদান রুখে দেওয়া হতে পারে, যা শিক্ষার পরিকাঠামো ও উন্নয়নে বড় ধাক্কা হতে পারে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই অনুদানই গবেষণা, উন্নয়ন ও ফ্যাকাল্টি উন্নয়নের জন্য প্রধান উৎস।
ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও ছাড় নয়, জানিয়ে দিল ইউজিসি
UGC-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—ছাত্রছাত্রীদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনওভাবেই শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না। অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন শুধু নিয়ম নয়, এটি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার মৌলিক কাঠামোর অঙ্গ। এ বিষয়ে অবহেলা মানে শুধুই নিয়ম ভঙ্গ নয়, বরং সেটি ছাত্র কল্যাণের প্রতি চূড়ান্ত অবজ্ঞার প্রতিচ্ছবি। ফলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে ইউজিসি, এমন ইঙ্গিতও মিলেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভবিষ্যৎ প্রশ্নচিহ্নের মুখে, শিক্ষাঙ্গনে উদ্বেগের ছায়া
এই শোকজ নোটিশের পর রাজ্যের শিক্ষামহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ভরকেন্দ্র যদি অনুদান হ্রাস পায়, তবে সরাসরি প্রভাব পড়বে শিক্ষার মানে। ইতিমধ্যেই শিক্ষক সংগঠন, ছাত্র পরিষদ ও প্রশাসনিক মহলে বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। এই নোটিশকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের ইঙ্গিতও দেখছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।