ইউক্রেন যুদ্ধ: ট্রাম্পের অনিশ্চয়তায় ইউরোপের দ্বিধা, প্যারিসে নিরাপত্তা বৈঠক

ইউক্রেন যুদ্ধ: ট্রাম্পের অনিশ্চয়তায় ইউরোপের দ্বিধা, প্যারিসে নিরাপত্তা বৈঠক

ইউক্রেন যুদ্ধে ট্রাম্পের অনিশ্চিত অবস্থান ইউরোপকে দ্বিধায় ফেলেছে। ফ্রান্স ও ব্রিটেন প্যারিসে বৈঠক করে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব (sovereignty) নিশ্চিত করার উপায় নির্ধারণ করেছে।

বিশ্ব সংবাদ: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংঘাত কেবল ইউক্রেনের সীমান্তকেই প্রভাবিত করেনি, বরং বিশ্ব রাজনীতিতেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) অনিশ্চিত অবস্থানের কারণে ইউরোপীয় দেশগুলো এখন দ্বিধাগ্রস্ত। তারা বুঝতে পারছে না যে ইউক্রেনের সাহায্য এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা গ্যারান্টি (security guarantees) দেওয়ার জন্য কোন দিকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

ইউক্রেন যুদ্ধের (war) পরিস্থিতি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং আপাতত কোনো ठोस যুদ্ধবিরতির (ceasefire) আশা দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে, ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য তাদের সিদ্ধান্ত দ্রুত এবং সতর্কতার সাথে নেওয়া আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইউরোপের বৈঠকে নিরাপত্তা বিষয়ক উত্থাপিত প্রশ্ন

বৃহস্পতিবার প্যারিসে (Paris) ব্রিটেন (Britain) ও ফ্রান্সের (France) নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ থামার পরের পরিস্থিতি মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ করা। ইউরোপীয় দেশগুলি আলোচনা করেছে যে ভবিষ্যতে রাশিয়া (Russia) যদি পুনরায় আক্রমণ (attack) করে, তবে তাকে থামানোর জন্য কী ধরনের সামরিক (military) এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

বৈঠকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (Emmanuel Macron) এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার (Keir Starmer) স্পষ্ট করেছেন যে ইউক্রেনকে যে কোনো সামরিক নিরাপত্তা গ্যারান্টি (military security guarantee) দেওয়া হবে, তাতে আমেরিকার (United States) অংশগ্রহণ অপরিহার্য। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কেবল ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আমেরিকা এতে যোগ দিতে পারে, কিন্তু তিনি কোনো স্পষ্ট কৌশল জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি।

আমেরিকার অবস্থান এবং বৈশ্বিক দ্বিধা

আমেরিকার অনিশ্চিত অবস্থান ইউরোপীয় দেশগুলির জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প না তো রাশিয়ার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছেন, না তো যুদ্ধবিরতির (ceasefire) দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে, ইউরোপীয় নেতারা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়াকে কীভাবে থামানো যায় এবং ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব (sovereignty) কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন।

যদি আমেরিকা স্পষ্ট দিকনির্দেশনা না দেয়, তবে ইউরোপীয় দেশগুলিকে একাই ঝুঁকি নিতে হতে পারে। এই কারণেই ব্রিটেন ও ফ্রান্স ইউক্রেনে তাদের সৈন্য (troops) মোতায়েন করার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

ইউক্রেনে সৈন্য মোতায়েন নিয়ে ইউরোপের প্রস্তুতি

ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং এস্তোনিয়া স্পষ্ট করেছে যে তারা রাশিয়ার যেকোনো সম্ভাব্য পুনঃআক্রমণ মোকাবিলার জন্য ইউক্রেনে তাদের সৈন্য মোতায়েন করতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, পোল্যান্ড (Poland) স্পষ্ট করেছে যে তারা এই মিশনে অংশ নেবে না। পোল্যান্ডের অগ্রাধিকার হল ন্যাটো (NATO)-এর পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা কাঠামোকে শক্তিশালী করা।

এই প্রসঙ্গে, মার্চ মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাঁর ইউরোপীয় সহযোগীদের জানিয়েছিলেন যে রাশিয়াকে থামানোর জন্য অন্তত ১০,০০০ সৈন্যের প্রয়োজন হবে। সৈন্যদের রোটেশন এবং বিশ্রামের সময়কাল বিবেচনা করলে এই সংখ্যা ৩০,০০০ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ইউরোপ এই সংঘাতের গুরুত্ব সম্পর্কে একটি ব্যাপক কৌশল তৈরি করেছে।

Leave a comment