উত্তরপ্রদেশ ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন নীতি-২০২৫ অনুমোদন: বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত

উত্তরপ্রদেশ ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন নীতি-২০২৫ অনুমোদন: বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত

ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকে উৎসাহিত করার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার यूपी ইসিএমপি ২০২৫ নীতি অনুমোদন করেছে। এর ফলে ৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে, লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং রাজ্যটি টিভি, ল্যাপটপ, ক্যামেরা মডিউলের মতো যন্ত্রপাতির জন্য বিশ্বব্যাপী কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

লখনউ: মঙ্গলবার এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার यूपी ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং পলিসি-২০২৫ (UP ECMP 2025) অনুমোদন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো রাজ্যটিকে একটি বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এই নীতির অধীনে আগামী ৬ বছরে ডিসপ্লে, ক্যামেরা মডিউল, মাল্টিলেয়ার পিসিবি সহ ১১টি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক উপাদানের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে।

यूपी ইসিএমপি ২০২৫ থেকে আনুমানিক ৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। নীতিটি কেন্দ্রীয় সরকারের ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং স্কিম (ECMS) এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়িত করা হবে।

নীতি থেকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ

UP ECMP 2025 কার্যকর হলে রাজ্যে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, নীতির অধীনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। নীতির আওতায় উদ্যোক্তাদের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রণোদনা দেওয়া হবে, যা উত্তরপ্রদেশের বর্তমান ইলেকট্রনিক্স ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করবে এবং রাজ্যটিকে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি পছন্দের কেন্দ্র করে তুলবে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন যে এই নীতি তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারও বাড়াবে। এর ফলে উত্তরপ্রদেশ কেবল জাতীয়ভাবেই নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে অগ্রণী হয়ে উঠবে।

ক্যামেরা, পিসিবি ও মোবাইল উৎপাদনে বৃদ্ধি

নীতি অনুযায়ী ডিসপ্লে, ক্যামেরা মডিউল এবং মাল্টিলেয়ার পিসিবি-র উৎপাদনে জোর দেওয়া হবে। প্রধান সচিব অনুরাগ যাদব জানিয়েছেন যে গত আট বছরে রাজ্য ও দেশে ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনে অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে। ২০১৫ সালে মাত্র ২ টি মোবাইল ইউনিট চালু ছিল, কিন্তু এখন ৩০০ টি মোবাইল উৎপাদন ইউনিট চালু রয়েছে।

উত্তরপ্রদেশ ভারতের মোবাইল উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে দেশের অর্ধেকেরও বেশি মোবাইল ফোন তৈরি হয়। নীতি কার্যকর হলে রাজ্যে সরবরাহ চেইন শক্তিশালী হবে, উদ্ভাবনে উৎসাহ মিলবে এবং রাজ্যটি বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রনিক্স হাব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

পারিবারিক সম্পত্তির উপর স্ট্যাম্প শুল্কে স্বস্তি

মন্ত্রিসভা পারিবারিক সম্পত্তি বণ্টনের জন্য বিভাজন দলিলের উপর স্ট্যাম্প শুল্ক এবং রেজিস্ট্রেশন ফি সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে ৪ শতাংশ স্ট্যাম্প শুল্ক এবং ১ শতাংশ রেজিস্ট্রেশন শুল্ক প্রযোজ্য।

এই পরিবর্তনের ফলে মানুষ বিভাজন দলিল নিবন্ধনে দ্বিধা করবে না, যার ফলে দেওয়ানি ও রাজস্ব আদালতে মামলার সংখ্যা হ্রাস পাবে। এছাড়াও, সম্পত্তির সুষ্ঠু বণ্টন সম্ভব হবে।

রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে রাজস্ব বৃদ্ধি

যদিও এই ছাড়ের ফলে প্রাথমিকভাবে রাজস্ব ক্ষতি হবে, তবে ভবিষ্যতে রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে রাজস্বে দীর্ঘমেয়াদী বৃদ্ধি ঘটবে। এই নীতি খতিয়ান ও অধিকারের দলিল আপডেট করবে এবং সম্পত্তি বাজারে সহজে উপলব্ধ হবে। তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে এই ধরনের ব্যবস্থা আগে থেকেই চালু রয়েছে, যা ইতিবাচক ফলাফল দেখিয়েছে। উত্তরপ্রদেশে এই নীতি কার্যকর করা হলে তা রাজ্যটিকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী কেন্দ্র করে তোলার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ প্রমাণিত হবে।

Leave a comment