রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সামরিক বৈঠক ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ: উদ্বেগ বাড়ছে আঞ্চলিক নিরাপত্তায়

রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সামরিক বৈঠক ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ: উদ্বেগ বাড়ছে আঞ্চলিক নিরাপত্তায়

পিয়ংইয়ং-এ রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সময় কৌশলগত সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে সম্মতি জানানো হয়। বৈঠকের পরপরই উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

World News: রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে, এবং এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতা দ্রুত শক্তিশালী হতে দেখা যাচ্ছে। এই সপ্তাহে পিয়ংইয়ং-এ উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা অনুযায়ী, এই আলোচনা এমন এক সময়ে হয়েছে যখন ইউক্রেন যুদ্ধ-সংক্রান্ত বিষয়ে উভয় দেশ একে অপরের কাছাকাছি এসেছে।

বৈঠকে উপস্থিত উভয় দেশের প্রতিনিধি

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA) জানিয়েছে যে, উত্তর কোরিয়ার পক্ষে কোরিয়ান পিপলস আর্মির জেনারেল পলিটিক্যাল ব্যুরোর উপ-পরিচালক পাক ইয়ং ইল আলোচনার নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে, রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভিক্টর গোরেমিয়কিনের নেতৃত্বে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, আলোচনায় এই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে যে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে উভয় দেশের সম্পর্কের যে অগ্রগতি হয়েছে, তা আরও শক্তিশালী করা হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার দাবি

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা সম্প্রতি সংসদ সদস্যদের সঙ্গে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দাবি করেছে যে, উত্তর কোরিয়ায় যুদ্ধ-সংক্রান্ত নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের কার্যক্রমে বৃদ্ধি দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে অতিরিক্ত সৈন্য এবং সামরিক সহায়তা প্রদান করতে পারে। এই দাবি ইঙ্গিত করে যে, উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা এখন শুধুমাত্র রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক স্তরে সীমাবদ্ধ নেই।

বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ

আলোচনা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই উত্তর কোরিয়া পূর্ব সমুদ্র অঞ্চলের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে, এখন পর্যন্ত এটি স্পষ্ট হয়নি যে, নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি কী ধরনের ছিল এবং এটি কত দূরত্ব অতিক্রম করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ বর্তমানে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি। এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এমন এক সময়ে করা হয়েছে যখন এই অঞ্চলে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা আন্তর্জাতিক স্তরে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। আমেরিকা এবং দক্ষিণ কোরিয়া আগেও এই অভিযোগ করেছে যে, উত্তর কোরিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। যদিও উভয় দেশই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এখন সামরিক কর্মকর্তাদের বৈঠক এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা এই আশঙ্কাকে আরও গভীর করেছে যে, এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ভারসাম্য গুরুতরভাবে প্রভাবিত হতে পারে।

Leave a comment