ভিটামিন ই ব্যবহারের ঝুঁকি: ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার এখন ট্রেন্ডে। অনেকেই সরাসরি ক্যাপসুলের তেল মুখে বা চুলে মাখছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৫ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন ই প্রতিদিন শরীরে জমলে ‘ভিটামিন ই টক্সিসিটি’ দেখা দিতে পারে। এতে ত্বকের প্রদাহ, জ্বালাপোড়া থেকে শুরু করে রক্ত জমাট না বাঁধার মতো বিপজ্জনক সমস্যা দেখা দেয়।

ভিটামিন ই কীভাবে কাজ করে
ভিটামিন ই হল ফ্যাটে দ্রবণীয় এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে। এটি হার্টের অসুখ, কিছু ক্যানসার ও মস্তিষ্কজনিত রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এর অন্যতম কাজ রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করা।তবে এই ভিটামিনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখা জরুরি। অতিরিক্ত গ্রহণ করলে শরীরে ভিটামিনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
ত্বকে সরাসরি ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে
অনেকেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে তার নির্যাস মুখে মাখেন। যদিও এটি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে, কিন্তু অতিরিক্ত বা সরাসরি ব্যবহারে ত্বকের জ্বালা, প্রদাহ, এমনকি ফুসকুড়ি হতে পারে।বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকে সরাসরি না মেখে দই, মধু বা পাকা পেঁপের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়ানো যায়।

কাদের জন্য ভিটামিন ই সাপ্লিমেন্ট দরকার
যাঁরা লো-ফ্যাট ডায়েট অনুসরণ করেন, কিংবা কর্নস ডিজিজ বা সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত, তাঁদের শরীরে ভিটামিন ই-এর অভাব হতে পারে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে।তবে বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন—নিজে থেকে কখনওই ক্যাপসুল খাওয়া শুরু করা উচিত নয়।
অতিরিক্ত ভিটামিন ই-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভয়ানক
প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রামের বেশি ভিটামিন ই শরীরে জমলে রক্ত তরল হয়ে যায়। এর ফলে কেটে গেলে বা সার্জারির সময় রক্ত জমাট বাঁধে না। এছাড়া ব্লাড থিনার ওষুধ যেমন অ্যাসপিরিন বা ওয়ারফারিনের কার্যকারিতা কমে যায়।অতিরিক্ত গ্রহণে ব্রেস্ট ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতাও বাধাপ্রাপ্ত হয়, যা জীবনহানিকর হতে পারে।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কাও বাড়ায়
ভিটামিন ই টক্সিসিটির গুরুতর ফল হল হ্যামারেজিক স্ট্রোক। শরীরে ভিটামিন ই জমে গেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ভিটামিন কখনওই নেওয়া উচিত নয়।

ত্বক ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল এখন অনেকের প্রথম পছন্দ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন—অতিরিক্ত ব্যবহারে হতে পারে ত্বক, চুল ও শরীরের মারাত্মক ক্ষতি। এমনকি ভিটামিন ই টক্সিসিটি দেখা দিলে রক্তপাত ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কাও বাড়ে।













