বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম মধ্য অংশে অবস্থান করছে এক সক্রিয় নিম্নচাপ। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, এই নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। মূলত দক্ষিণ ওড়িশা এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এটি স্থলভাগে ঢুকে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বাংলায় এর সরাসরি কোনো প্রভাব নেই, তবুও সমুদ্রপথে যাতায়াতকারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি
বাংলার উপকূলে আপাতত কোনো বিপদ নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে দক্ষিণ ওড়িশা ও উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ২০ অগাস্ট পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান, তাদের উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, নিম্নচাপ সক্রিয় থাকায় গভীর সমুদ্রে প্রবল স্রোত ও ঢেউ তৈরি হতে পারে, যা বিপদের কারণ হতে পারে।
দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
আগামী শনিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া বইতে পারে। সেই কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জারি করা হয়েছে হলুদ অ্যালার্ট।
উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ চলবে, ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
সোমবার থেকেই উত্তরবঙ্গের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ নামতে পারে। বৃষ্টির সঙ্গে বইবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগের দমকা হাওয়া। শনিবার থেকে কিছুটা কমবে বৃষ্টির তীব্রতা ও বিস্তার। আবহবিদদের মতে, হিমালয়ের পাদদেশবর্তী এলাকায় জলস্তর হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হবে।
দক্ষিণবঙ্গের উইকেন্ডে প্রবল বর্ষণ
শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আপাতত প্রবল বর্ষণের কোনো ইঙ্গিত না থাকলেও পাসিং শাওয়ারের মতো বৃষ্টিই হবে বেশিরভাগ জায়গায়। সোমবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের কিছু অংশে। সঙ্গে বইবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হাওয়া। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে বলেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কলকাতায় মেঘলা আকাশ, আর্দ্রতায় অস্বস্তি
কলকাতায় ভারী বর্ষণের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা থেকে ঘন মেঘলা। বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি নামতে পারে শহরে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি ভোগাবে মানুষকে। বৃষ্টি না হলে এই অস্বস্তি আরও বাড়বে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা বেশি
সোমবার সকালে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ১.২ ডিগ্রি বেশি। রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেটিও স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৬৬ থেকে ৯১ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে বৃষ্টি হয়েছে ৫.৭ মিলিমিটার। আগামী দিনে তাপমাত্রা ২৭ থেকে ৩২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করবে বলেই পূর্বাভাস।