ব্যস্ত জীবনধারা, মানসিক চাপ ও দূষণের কারণে অকালপক্ব চুল, চুল পড়া ও টাকের সমস্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় ঘরোয়া প্রতিকারই হতে পারে সমাধান। যোগগুরু হংস যোগেন্দ্র জানিয়েছেন, নারকেল তেলের সঙ্গে কারি পাতা ও জবা ফুল, চালের জল, আমলকি-রিঠার প্রাকৃতিক শ্যাম্পু এবং তেজপাতার সিরাম ব্যবহার করলে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে চুলে আসবে দৃশ্যমান পরিবর্তন।
তেল ম্যাসাজে মজবুত হবে গোড়া
চুল পড়া রোধ ও গোড়া শক্ত করতে নিয়মিত তেল ম্যাসাজ অপরিহার্য। নারকেল তেলের সঙ্গে কারি পাতা ও জবা ফুল মিশিয়ে হালকা গরম করে সপ্তাহে ২–৩ বার মাথায় মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, চুল পুষ্ট হয় এবং বাড়ে নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা।
প্রোটিন ও হেয়ার মাস্কের ভূমিকা
চুলের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। অঙ্কুরিত মুগ ডাল, মেথি বীজ ও দই মিশিয়ে তৈরি হেয়ার মাস্ক সপ্তাহে একবার লাগালে ভাঙা চুল রোধ হয় এবং গোড়া শক্ত হয়। পাশাপাশি, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ, বাদাম ও ডাল রাখা জরুরি।
রাসায়নিক শ্যাম্পুর বদলে প্রাকৃতিক শ্যাম্পু
বাজারে পাওয়া রাসায়নিক শ্যাম্পু চুল দুর্বল করে দিতে পারে। বিকল্প হিসেবে আমলকি ও রিঠার গুঁড়ো জলে ফুটিয়ে শ্যাম্পু বানানো যায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথার ত্বক পরিষ্কার হয়, খুশকি কমে এবং চুল হয় মজবুত ও উজ্জ্বল।
চালের জল: প্রাচীন ঘরোয়া কৌশল
চুল লম্বা ও ঘন করার জন্য চালের জল বহু পুরনো পদ্ধতি। সারারাত ভিজিয়ে রাখা চালের জল শ্যাম্পুর পর ধুলে চুল নরম, চকচকে ও শক্তিশালী হয়। নিয়মিত ব্যবহার করলে দ্রুত চুল বাড়তে সাহায্য করে।
তেজপাতার স্প্রে: পাকা চুলের সমাধান
তেজপাতা ফুটিয়ে তৈরি জল বোতলে ভরে মাথার ত্বকে স্প্রে করলে চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছায়। এটি শুধু নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে না, বরং অকালপক্ব চুলও নিয়ন্ত্রণে রাখে। নিয়মিত ব্যবহার করলে কালো, মজবুত ও ঘন চুল ফিরে পাওয়া সম্ভব।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অপরিহার্য
শুধু বাহ্যিক যত্নে নয়, চুল সুন্দর রাখতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, মৌসুমি ফল, সবুজ শাকসবজি, তিসির বীজ ও বাদাম খাওয়া চুলের স্বাস্থ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
পাকা চুল কিংবা চুল পড়া এখন সাধারণ সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরোয়া প্রতিকারেই এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। তেজপাতা, চালের জল, জবা ফুল ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার চুলের গোড়া মজবুত করে, বাড়ায় ঘনত্ব এবং কমায় অকালপক্বতা।