শীতের শুরুতেই বাঁকুড়ার সরো কচুতে মজেছে গোটা বাংলা, জিভে জল মেয়েদের

শীতের শুরুতেই বাঁকুড়ার সরো কচুতে মজেছে গোটা বাংলা, জিভে জল মেয়েদের

বাঁকুড়ার সরো কচু:শীতের শুরুতেই বাঁকুড়ার সেন্দ্রা মৌজার গ্রামগুলোতে শুরু হয়েছে ‘সারো কচু’ তোলার মরশুম। এই সবজি থেকেই তৈরি হয় সেই বিখ্যাত চিপস, যা শিয়ালদা, দমদম, হাওড়ার ট্রেনে বিক্রি হয়। স্থানীয় কৃষকরা জানান, তিন মাস ধরে যত্ন নিয়ে এই কচু চাষ করতে হয়। ফলন উঠলে গোটা বাংলা যেন স্বাদের উৎসবে মেতে ওঠে।

বাঁকুড়ার মাটিতে জন্ম নেয় বিরল স্বাদের কচু

বাঁকুড়া জেলার সেন্দ্রা মৌজার কয়েকটি গ্রামেই চাষ হয় এই বিশেষ প্রজাতির কচু। স্থানীয়দের ভাষায় এর নাম ‘সারো কচু’। মাটির নিচে জন্ম নেওয়া এই সবজিটি চিপস তৈরির জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বলে জানাচ্ছেন কৃষকরা। এর রঙ হালকা বাদামি এবং স্বাদে হালকা ঝাঁঝ রয়েছে, যা ভাজার পর মচমচে হয়ে ওঠে।

চিপসের রসদ সরবরাহ করে বাঁকুড়া

যাত্রীদের প্রিয় ট্রেনচিপসের মূল উপাদানই হল এই বাঁকুড়ার সারো কচু। স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা কচু আসানসোল ও শিয়ালদার আঞ্চলিক কারখানায় পাঠানো হয়। সেখানেই প্রক্রিয়াজাত হয়ে তৈরি হয় জনপ্রিয় কচু চিপস। আলুর চিপসের পাশাপাশি এই বিশেষ চিপসের ক্রেজ দিনে দিনে বাড়ছে।

চাষের পদ্ধতি কঠিন, যত্নও দরকার বেশি

স্থানীয় কৃষক মিন্টু দাস জানান, সারো কচু চাষ সহজ নয়। প্রথমে বীজ কেটে শুকিয়ে তিন মাস পরে রোপণ করতে হয়। প্রতি দুই দিন অন্তর সেচ দিতে হয়, ধান চাষের মতোই জল লাগে। বাঁকুড়ার রুক্ষ মাটিতেও কৃষকরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এই কচু ফলাতে পারেন শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার জোরে।

স্থানীয় বাজার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে

ফসল উঠলেই কচু বোঝাই গাড়ি রওনা দেয় দুর্গাপুর, আসানসোল ও শিয়ালদার বাজারে। প্রতিটি গাড়িতে থাকে প্রায় ৫০–৬০ কুইন্টাল কচু। দাম থাকে কুইন্টাল প্রতি ২৫–৩০ টাকা, আর সরবরাহ বাড়লে নেমে আসে ১৫–২০ টাকায়। স্থানীয়রাও মাছের ঝোলে বা ভর্তায় এই কচু খেতে ভীষণ পছন্দ করেন।

শীতের আবেশে ‘সারো কচু’র জনপ্রিয়তা তুঙ্গে

শীত পড়তেই রাজ্যের নানা প্রান্তে এই সবজির চাহিদা বেড়ে যায়। বাঁকুড়ার কৃষকেরা বলেন, শীতের এই সরো কচু না পেলে যেন ভোজনরসিক বাঙালির খাওয়া অসম্পূর্ণ থেকে যায়। শুধু গ্রামীণ মানুষই নয়, শহরবাসীর কাছেও এই কচুর তৈরি চিপস এখন অপরিহার্য নাস্তা।

শীতের শুরু মানেই নতুন শাকসবজির আমেজ। বাঁকুড়ার মাঠে এখন উঠছে এক বিশেষ সবজি—‘সারো কচু’। এই কচু দিয়েই তৈরি হয় ট্রেনযাত্রার বিখ্যাত চিপস, যা খেতে পাগল সকলে। বিশেষ করে মেয়েদের কাছে এই স্বাদের আবেদন আলাদা।

Leave a comment