যোগী আদিত্যনাথের ঘোষণা: উত্তর প্রদেশে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিপ্লব, খেলোয়াড়দের জন্য সরকারি চাকরি ও আধুনিক পরিকাঠামো

যোগী আদিত্যনাথের ঘোষণা: উত্তর প্রদেশে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিপ্লব, খেলোয়াড়দের জন্য সরকারি চাকরি ও আধুনিক পরিকাঠামো

গোরখপুরের গোরক্ষনাথ মন্দিরে নাগপঞ্চমী উপলক্ষ্যে আয়োজিত রাজ্য স্তরের সিনিয়র প্রাইজমানি কুস্তি প্রতিযোগিতার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য সরকারের ক্রীড়া নীতি নিয়ে বড় ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশে খেলার বিকাশে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং গত আট বছরে এই লক্ষ্যে অনেক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার শুধুমাত্র গ্রামীণ স্তরে খেলার পরিকাঠামো বাড়ায়নি, বরং আন্তর্জাতিক পদকজয়ী খেলোয়াড়দের সরকারি চাকরি দিয়ে সম্মানিতও করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেন, গ্রামীণ স্তরে খেলার মাঠ, ব্লক স্তরে মিনি স্টেডিয়াম এবং জেলা স্তরে আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাজ্যে ৫০০-র বেশি খেলোয়াড়কে সরকারি চাকরি দিয়ে নতুন পরিচিতি দেওয়া হয়েছে, যার ফলে উত্তর প্রদেশ এখন ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম।

খেলো ইন্ডিয়া ভারতীয় খেলার দৃশ্যপট পরিবর্তন করেছে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই উদ্যোগ গত এক দশকে ভারতীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটিয়েছে। অলিম্পিক, এশিয়াড এবং কমনওয়েলথ গেমসের মতো আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে দেশের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এবং পারফরম্যান্স আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, উত্তর প্রদেশের খেলোয়াড়রাও এখন এই মঞ্চগুলোতে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী জানান, গোরক্ষনাথ মন্দিরে বহু পুরনো কুস্তির ঐতিহ্যকে এখন রাজ্য স্তরের অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এই আয়োজন শুধুমাত্র খেলার স্পৃহাই বাড়ায় না, বরং যুবকদের মধ্যে শৃঙ্খলা, উদ্যম এবং আত্মবিশ্বাসও সঞ্চার করে। তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা খুবই জরুরি এবং একটি সুস্থ শরীরই জীবনে ধর্ম ও কর্তব্য পালনে সক্ষম হয়।

৮ বছরে খেলার ছবি বদলে গেছে

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত আট বছরে উত্তর প্রদেশে খেলার ছবি পুরোপুরি বদলে গেছে। রাজ্য সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের শুধু সম্মানিতই করেনি, বরং তাদের প্রয়োজনীয় সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধাও দিয়েছে। গ্রামে খেলার মাঠ নির্মাণ, ব্লক স্তরে মিনি স্টেডিয়াম এবং জেলায় আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়েছে। যুবক মঙ্গল দল ও মহিলা মঙ্গল দলের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে খেলোয়াড়দের স্পোর্টস কিট বিতরণ করা হয়েছে, যার ফলে গ্রামে খেলাধুলা নিয়ে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।

নাগপঞ্চমীতে কুস্তিগীরদের সম্মান

নাগপঞ্চমীর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এই উৎসবকে আধ্যাত্মিক শক্তি এবং জীবজন্তুর প্রতি করুণার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, কুস্তির মতো ঐতিহ্যবাহী খেলা শুধুমাত্র শারীরিক শক্তির প্রদর্শন নয়, বরং আধ্যাত্মিক ভারসাম্য ও শৃঙ্খলারও প্রতীক। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ‘উত্তর প্রদেশ কেশরী’ জন্টি ভাটিকে ১.০১ লক্ষ টাকা ও গদা, ‘উত্তর প্রদেশ কুমার’ সৌরভকে ১.০১ লক্ষ টাকা ও গদা এবং ‘বীর অভিমন্যু’ Monu-কে ৫১ হাজার টাকা ও গদা দিয়ে সম্মানিত করেন।

২০ হাজারের বেশি গ্রামে তৈরি হয়েছে খেলার মাঠ

অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী গিরিশ চন্দ্র যাদব বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে রাজ্যে খেলাধুলা নতুন দিশা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০,০০০-এর বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতে খেলার মাঠ তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের নীতির ফলেই এখন গ্রাম-গ্রাম থেকে খেলার প্রতিভা উঠে আসছে এবং রাজ্য ও দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে।

এই অনুষ্ঠানে মেয়র ডাঃ মঙ্গলেশ শ্রীবাস্তব, এমএলসি ডাঃ ধর্মেন্দ্র সিং, বিধায়ক বিপিন সিং সহ অনেক জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

Leave a comment